ফুলডুবির লোকেরা পরের দিন সকালে দেখল, পুরোনো রেললাইনের বিশাল এলাকা জুড়ে শুধু গভীর কালো মাটি। কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন নেই, কিন্তু রেললাইনগুলো যেন মাটি থেকে মুছে গেছে। পুরো এলাকা জুড়ে পড়ে আছে সেই নীলচে ধূলি।
হরিশঙ্কর বাবু এবং দিবাকর ঠাকুর জানতেন কী ঘটেছে। অভিশাপ এবং তার প্রহরী শেষমেশ মুক্তি পেয়েছে।
ফুলডুবির অভিশাপ দূর হলো। কিন্তু অয়ন আর কোনোদিন ফিরে আসেনি।
দিবাকর ঠাকুর পরে ফুলডুবির পুঁথিতে লিখেছিলেন:
"বাসনা-বন্ধন ছিন্ন করিতে গিয়া অয়ন নিজ অস্তিত্বের বন্ধন ছিন্ন করিল। ট্রেন আর আসে না, কারণ তাহার শেষ যাত্রী নিজেই তাহার গন্তব্য হইয়া গিয়াছে। তাহার মুক্তি ফুলডুবির স্বাধীনতা, কিন্তু তাহার বন্ধুর মুক্তি তাহার নিজের ধ্বংস।"
অয়নের জীবন একটি অন্তহীন শূন্যতা হয়ে ফুলডুবির ইতিহাসে মিশে গেল। সে তার বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের যুক্তিবাদী অস্তিত্বকে বলি দিয়েছিল। ফুলডুবি স্বাধীন হলো, কিন্তু তার দুই শ্রেষ্ঠ সন্তান রহস্যময়ী রাত্রিযানের কাছে চিরকালের জন্য ঋণী হয়ে রইল।
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion