Episode 82157 words0 views

অনুরাগের বাঁধন: পর্ব ৮

প্রতিবাদের পথ: চূড়ান্ত সংঘাত ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম সোনালী রাহুলকে বোঝাল, পালিয়ে থাকা বা সম্পর্ক ছিন্ন করা কোনো সমাধান নয়। তাদের এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য লড়তে হবে। তারা সিদ্ধান্ত নিল, এই ভয়ংকর চক্রের বিরুদ্ধে তারা প্রমাণ সংগ্রহ করবে এবং আইনের সাহায্য নেবে। কাজটি সহজ ছিল না, প্রায় অসম্ভব ছিল, যেন তারা এক বিশাল পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার চেষ্টা করছিল, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল ঝুঁকিপূর্ণ, প্রতিটি মুহূর্তে ছিল মৃত্যুভয়, প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল অনিশ্চিত, প্রতিটি ছায়া ছিল সন্দেহজনক। তাদের কাছে তথ্য ছিল খুব কম, আর চক্রটি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী ও গোপনীয়, তাদের ক্ষমতা ছিল অসীম, তাদের নেটওয়ার্ক ছিল ব্যাপক, যা পুরো দেশকে গ্রাস করেছিল, যা তাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করছিল, তাদের প্রতিটি পদক্ষেপের উপর নজর রাখছিল। রাহুলের পুরোনো ডায়েরি ছিল একটি সূত্র, কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না, তা ছিল শুধু একটি ছোট ঝলক, একটি শুরু, একটি আলোর রেখা, একটি ইঙ্গিত, যা তাদের পথ দেখাচ্ছিল, একটি ছোট আশার আলো। তারা নিজেদের মধ্যে একটি গোপন পরিকল্পনা তৈরি করল। তারা একে অপরের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখল, তাদের বিশ্বাস ছিল অটুট, যা তাদের শক্তি জোগাচ্ছিল, তাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তাদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করছিল, তাদের আত্মাকে একীভূত করছিল। সোনালী তার বুদ্ধিমত্তা এবং দৃঢ় সংকল্প দিয়ে রাহুলের পাশে দাঁড়াল, সে ছিল রাহুলের সবচেয়ে বড় শক্তি, তার অনুপ্রেরণা, তার বেঁচে থাকার কারণ, তার সমস্ত আশা, তার সব স্বপ্ন। তারা দুজনেই অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করল। পুরোনো ইমেইল, অডিও রেকর্ডিং, ছবি – যা কিছু তারা সংগ্রহ করতে পারছিল, তারা একত্রিত করতে শুরু করল, প্রতিটি তথ্য ছিল অমূল্য, প্রতিটি প্রমাণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিটি টুকরো তাদের উদ্দেশ্য পূরণে সাহায্য করছিল, তাদের লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করছিল। রাহুলের কিছু পুরোনো পরিচিতি ছিল, যারা এই চক্রের বিরুদ্ধে ছিল অথবা চক্রের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাদের সাথে যোগাযোগ করে কিছু গোপন তথ্য সংগ্রহ করল, যা চক্রের দুর্বলতা উন্মোচন করতে সাহায্য করবে, তাদের পতন ঘটাবে, তাদের সাম্রাজ্য ভেঙে দেবে, তাদের ক্ষমতা চূর্ণ করবে, তাদের অস্তিত্ব বিলীন করে দেবে। প্রতিটি পদক্ষেপে ছিল ঝুঁকি, প্রতিটি মুহূর্তে ছিল জীবনের ভয়, কিন্তু তারা জানত, এই ঝুঁকি না নিলে তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই, তাদের ভালোবাসা কোনোদিন পূর্ণতা পাবে না, তাদের জীবন অন্ধকারে ডুবে যাবে, তারা চিরতরে হারিয়ে যাবে, তাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে, তাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে। একবার তারা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে পেল। চক্রের প্রধান, যিনি শহরের একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তার কিছু অবৈধ আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ। এই প্রমাণগুলো এমন ছিল যা তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনা যেত, যা তাদের সাম্রাজ্যকে গুঁড়িয়ে দিতে পারত, তাদের ক্ষমতাকে চূর্ণ করতে পারত, তাদের পতন অনিবার্য করে তুলত, তাদের সব স্বপ্ন ভেঙে দিত, তাদের জীবনকে শেষ করে দিত। এই প্রমাণগুলো একটি পুরনো, পরিত্যক্ত গুদামের ভেতরে একটি গোপন লকারে রাখা ছিল। গুদামটি শহরের এক নির্জন প্রান্তে অবস্থিত, যেখানে কোনো মানুষের আনাগোনা ছিল না, যা এক ভৌতিক পরিবেশ তৈরি করছিল, যেখানে শুধু অন্ধকার আর ভয় ছিল, এক গা ছমছমে পরিবেশ, এক পৈশাচিক আভা। কিন্তু এই প্রমাণগুলো সংগ্রহ করতে গিয়ে তাদের নিজেদের জীবনও চরম ঝুঁকিতে পড়ে গেল, তারা যেন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করছিল, প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া, প্রতিটি মুহূর্ত ছিল ভয়ংকর, প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল বিপজ্জনক, তাদের জীবন ছিল সংকটাপন্ন। রাহুল আর সোনালী একটি নির্জন রাতে সেই পরিত্যক্ত গুদামের দিকে রওনা দিল। ভয়ে তাদের বুক ধড়ফড় করছিল, প্রতিটি নিঃশ্বাসে ছিল ভয়, কিন্তু তাদের চোখে ছিল অদম্য সাহস, এক অসীম শক্তি, যা তাদের বাঁচতে সাহায্য করছিল, তাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তাদের নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখাচ্ছিল, তাদের স্বাধীনতার জন্য লড়তে প্রস্তুত করছিল। তারা গুদামের ভেতরে প্রবেশ করল, টর্চের আলোয় চারিদিক খুঁজে দেখছিল। দুর্গন্ধ আর স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এক গা ছমছমে ভাব ছিল, প্রতিটি কোণায় যেন রহস্য লুকিয়ে ছিল, প্রতিটি ছায়া যেন তাদের দিকে এগিয়ে আসছিল, প্রতিটি শব্দ যেন তাদের ভয় দেখাচ্ছিল, প্রতিটি মুহূর্ত ছিল অনিশ্চিত। অবশেষে তারা সেই গোপন লকারটি খুঁজে পেল, যা দেয়ালের আড়ালে লুকানো ছিল, এক সুরক্ষিত স্থানে, যা ভাঙা খুব কঠিন ছিল, যা তাদের একমাত্র আশা ছিল, তাদের জীবনের চাবিকাঠি। রাহুল লকারটি খোলার চেষ্টা করছিল, তার হাত কাঁপছিল, তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছিল, তার নিঃশ্বাস দ্রুত চলছিল, ঠিক তখনই তাদের উপর হামলা হলো। মুখোশধারী কয়েকজন লোক তাদের ঘিরে ফেলল, তাদের হাতে ছিল ছুরি আর বন্দুক, তাদের চোখ থেকে যেন হিংসা ঝরে পড়ছিল, তারা যেন এক ক্ষুধার্ত শিয়াল, রক্ত পিপাসু, মানুষরূপী দানব, এক অন্ধকারের শক্তি। রাহুল সোনালীকে রক্ষা করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ল, তার জীবন দিয়ে সোনালীকে রক্ষা করার চেষ্টা করল, তাকে নিজের আড়ালে নিল, তাকে বাঁচানোর জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত ছিল, তার শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত। এক তীব্র ধস্তাধস্তি শুরু হলো, অন্ধকার গুদামের মধ্যে এক জীবন-মৃত্যুর খেলা শুরু হলো, যেখানে প্রতিটি আঘাত ছিল মারাত্মক, প্রতিটি মুহূর্ত ছিল ভয়ংকর, প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল মৃত্যুর দিকে, প্রতিটি সেকেন্ড ছিল এক অনন্ত যুদ্ধ। রাহুল তার সমস্ত শক্তি দিয়ে লড়ছিল, তার গায়ে একের পর এক আঘাত লাগছিল, তার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে গিয়েছিল, তার শরীর ক্ষতবিক্ষত হচ্ছিল, তার প্রতিটি পেশি ব্যথা করছিল, কিন্তু সে থামল না, তার চোখে ছিল আগুন, এক অদম্য জেদ, সে যেন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছিল, তার জীবনের জন্য, তার ভালোবাসার জন্য, তার অস্তিত্বের জন্য, তার স্বাধীনতার জন্য। সোনালী প্রমাণগুলো শক্ত করে ধরে রাখল, তার শরীর ব্যথা করছিল, কিন্তু জীবন দিয়ে হলেও সে এগুলো রক্ষা করবে, কারণ এই প্রমাণগুলো ছিল তাদের ভবিষ্যতের চাবিকাঠি, তাদের বাঁচার একমাত্র আশা, তাদের স্বাধীনতার প্রতীক, তাদের নতুন জীবনের শুরু, তাদের সব স্বপ্ন। এক হামলাকারী তার দিকে এগিয়ে আসতেই সোনালী সুযোগ বুঝে একটি ভারী লোহার রড তুলে নিল এবং তার মাথায় সজোরে আঘাত করল, লোকটি আর্তনাদ করে লুটিয়ে পড়ল, তার শরীর নিথর হয়ে গেল, তার আক্রমণ থেমে গেল। রাহুলের চোখে এক ঝলক গর্ব ফুটে উঠল সোনালীর সাহসিকতা দেখে, সে জানত সোনালী কতটা শক্তিশালী, সে কতটা সাহসী, সে তার জন্য কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে পারে, সে কতটা নির্ভীক, সে তার জন্য কতটা করতে পারে। রাহুল আঘাতপ্রাপ্ত শরীর নিয়েও আরেকজনের সাথে লড়ছিল, তার প্রতিটি আঘাত ছিল নির্ভুল, তার ক্রোধ তাকে শক্তি দিচ্ছিল, তাকে এক যোদ্ধা করে তুলেছিল, এক অদম্য শক্তি তার মধ্যে ভর করেছিল, সে যেন এক উন্মত্ত বাঘ, যার একমাত্র লক্ষ্য শত্রু বিনাশ। সোনালী পাশে থাকা একটি ভাঙা কাঁচের বোতল তুলে নিয়ে আরও একজনের চোখে আঘাত করল, লোকটি চিৎকার করে উঠল, সে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল, তার শরীর কাঁপছিল, সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। তারা দুজনেই রক্তাক্ত, ক্লান্ত, কিন্তু তাদের লড়াই থামেনি, তাদের চোখে ছিল বিজয়ের আগুন, এক অদম্য স্পৃহা, তারা যেন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছিল, তাদের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত, তাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত, তারা দু’জন মিলে হামলাকারীদের পরাস্ত করল, তাদের গুদাম থেকে তাড়িয়ে দিল, তাদের সাহস আর ভালোবাসা জয়ী হলো, তারা যেন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিল, এক নতুন জীবনের স্বাদ পেল, এক নতুন আশার আলো দেখল। তাদের ভালোবাসার বাঁধনই ছিল তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। সেই ভয়ংকর মুহূর্তেও তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে ছিল, চোখে ছিল দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, এক অসীম ভরসা, যা তাদের বাঁচতে সাহায্য করেছিল, তাদের এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের আত্মাকে একত্রিত করেছিল, তাদের জীবনকে একীভূত করেছিল। এই যুদ্ধ শুধু তাদের অস্তিত্বের জন্য নয়, তাদের ভালোবাসার জন্যও। তারা জানত, হয় আজ তারা জিতবে, অথবা চিরতরে হেরে যাবে। কিন্তু তারা হার মানতে রাজি ছিল না, তাদের প্রেম তাদের এই কঠিন পথ পাড়ি দিতে শিখিয়েছে, সাহস জুগিয়েছে প্রতিটি পদে, তাদের অদম্য করে তুলেছে, তাদের জয়ী করেছে, তাদের স্বাধীন করেছে, তাদের জীবনকে নতুন অর্থ দিয়েছে, তাদের নতুন পরিচয় দিয়েছে। সেই রাতে, রাহুল আর সোনালী জীবনপণ লড়াই করে প্রমাণগুলো রক্ষা করতে সক্ষম হলো। তারা আহত হয়েছিল, তাদের শরীর রক্তাক্ত হয়েছিল, প্রতিটি পেশিতে ব্যথা হচ্ছিল, কিন্তু তাদের মনের জোর ছিল অটুট, যেন তাদের আত্মা আরও শক্তিশালী হয়েছে, এক নতুন জন্ম লাভ করেছে, এক নতুন সত্তা, এক নতুন জীবন। ভোরের আলো যখন গঙ্গার উপর পড়তে শুরু করল, তারা কোনোরকমে পুলিশ স্টেশনে পৌঁছাল, তাদের সারা শরীরে ছিল ধুলো আর রক্তের দাগ, কিন্তু তাদের চোখে ছিল বিজয়ের আভা, এক নতুন জীবনের আলো, এক নতুন আশার ঝলক। তাদের হাতে ছিল সেই সব প্রমাণ, যা দিয়ে চক্রের মুখোশ খুলে দেওয়া যাবে, যা দিয়ে অনেক নিরীহ মানুষের জীবন বাঁচানো যাবে, সমাজকে কলঙ্কমুক্ত করা যাবে, এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে, এক নতুন ভবিষ্যৎ গড়বে, যেখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠা হবে, যেখানে শান্তি ফিরে আসবে। পুলিশ প্রথমে তাদের কথা বিশ্বাস করতে চাইছিল না, তাদের দিকে সন্দেহের চোখে তাকাচ্ছিল, তাদের গল্পকে অবিশ্বাসের চোখে দেখছিল, কিন্তু প্রমাণগুলো দেখে তারা হতবাক হয়ে গেল। প্রতিটি প্রমাণ ছিল অকাট্য, প্রতিটি তথ্য ছিল সুনির্দিষ্ট, যা চক্রের পতন নিশ্চিত করল, তাদের সাম্রাজ্য ভেঙে দিল, তাদের ক্ষমতা চূর্ণ করল, তাদের অস্তিত্ব বিলীন করে দিল, তাদের সব স্বপ্ন ভেঙে দিল। অনেক তদন্ত, অনেক জিজ্ঞাসাবাদ এবং দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর, অবশেষে সেই ভয়ংকর চক্রের প্রধান এবং তার সঙ্গীদের গ্রেপ্তার করা হলো। সমাজের প্রভাবশালী মুখোশধারী মানুষগুলোর আসল চেহারা প্রকাশ্যে এল, তাদের দুর্নীতি আর বর্বরতা সারা দেশ জুড়ে প্রচারিত হলো, মানুষ তাদের আসল রূপ জানতে পারল, তাদের প্রতি ঘৃণায় ভরে উঠল, তাদের পতন দেখে সবাই খুশি হলো, এক নতুন সকাল এল। সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনে এই খবর ফলাও করে প্রচার করা হলো, মানুষ জানতে পারল ‘দ্য শ্যাডো উলফস’ এর আসল রূপ, তাদের ভয়ংকর কর্মকাণ্ড, তাদের সব গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে গেল, তাদের মুখোশ খুলে গেল, তাদের সাম্রাজ্য চূর্ণ হয়ে গেল। রাহুল এবং সোনালীর জীবনের সেই ভয়ংকর অধ্যায় শেষ হলো, তারা যেন নতুন করে শ্বাস নিতে শুরু করল, এক মুক্তির বাতাস তাদের ছুঁয়ে গেল, এক নতুন জীবন শুরু হলো, যেখানে শুধু শান্তি আর ভালোবাসা ছিল, কোনো ভয় ছিল না, কোনো বাধা ছিল না, কোনো অনিশ্চয়তা ছিল না। তাদের জীবন আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করল, ধীরে ধীরে তারা নিজেদের ক্ষত সারিয়ে তুলছিল, তাদের শরীর ও মন সুস্থ হয়ে উঠছিল, তারা নতুন করে বাঁচতে শিখছিল, তাদের জীবনে নতুন রঙ ফিরছিল, তাদের স্বপ্নগুলো আবার ডানা মেলছিল। তবে এই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাদের ভালোবাসা আরও পোক্ত হয়েছিল। তারা একে অপরের প্রতি আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল, তাদের সম্পর্ক যেন ইস্পাতের মতো শক্ত হয়ে গিয়েছিল, যা কোনো ঝড়েই ভাঙবে না, কোনো শক্তিই তাদের আলাদা করতে পারবে না, তাদের বন্ধন ছিল চিরন্তন, অমর, অটুট। এখন তাদের কোনো গোপনীয়তা নেই, কোনো ভয় নেই, তাদের জীবন খোলা বইয়ের মতো, প্রতিটি মুহূর্ত ছিল স্বচ্ছ, প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল স্বাধীন, তাদের জীবন ছিল মুক্ত, অবাধ। তারা জানে, তারা যে কোনো ঝড় মোকাবেলা করতে পারে, কারণ তাদের ভালোবাসা তাদেরকে শিখিয়েছে কীভাবে লড়তে হয়, কীভাবে জিততে হয়, কীভাবে একসাথে পথ চলতে হয়, কীভাবে একে অপরকে রক্ষা করতে হয়, কীভাবে ভয়কে জয় করতে হয়, কীভাবে বাঁচতে হয়, কীভাবে স্বপ্নকে সত্যি করতে হয়। গঙ্গার ঘাটে তারা আবার ফিরে এল। ভোরের সেই পরিচিত আলো, সেই শীতল বাতাস, সেই পাখির কলরব, যা তাদের প্রথম সাক্ষাতের সাক্ষী ছিল, যা তাদের ভালোবাসার জন্ম দেখেছিল, যা তাদের চিরন্তন প্রেমের প্রতীক। রাহুল সোনালীর হাত ধরল, তাদের আঙুলগুলো একে অপরের সাথে মিশে গেল, এক নিবিড় বন্ধনে। তাদের চোখে এখন আর কোনো ভয় বা অস্থিরতা নেই, শুধু এক গভীর শান্তি আর সীমাহীন ভালোবাসা, যা তাদের আত্মাকে আলোকিত করছিল, তাদের জীবনকে পূর্ণতা দিচ্ছিল, তাদের মুখ উজ্জ্বল করে তুলেছিল, তাদের চোখে ছিল এক নতুন স্বপ্ন, এক অনন্ত ভবিষ্যতের আশা। তারা জানে, তাদের অনুরাগের বাঁধন ছিল অটুট, নির্ভীক, আর জীবনের চেয়েও বেশি সাহসী। তাদের এই প্রেমই ছিল তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি, যা তাদের সকল বিপদ থেকে রক্ষা করেছে, তাদের নতুন জীবন দিয়েছে, তাদের জয়ী করেছে, তাদের স্বাধীন করেছে। তাদের ভবিষ্যৎ এখন উজ্জ্বল, কারণ তারা একসাথে, হাতে হাত রেখে সকল বাধা অতিক্রম করতে প্রস্তুত, আর তাদের ভালোবাসার গল্প চিরকাল এক সাহসের প্রতীক হয়ে থাকবে, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দেবে, এক অমর প্রেমের উপাখ্যান হিসেবে, যা সময়ের সীমা অতিক্রম করবে, অনন্তকাল ধরে থাকবে, চিরদিন। ~সমাপ্ত~ ইতিহাসের আদালত : দ্বিতীয় অধ্যায় কালকূটের ইশারা পরের বাহাত্তর ঘন্টা ছিল একরাশ হতাশা এবং ক্লান্তিকর ছোটাছুটির যোগফল। অনির্বাণ এবং তার দল অভিনব চ্যাটার্জীর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় নিয়ে কার্যত পোস্টমর্টেম করল। তার ব্যবসার অংশীদারদের সাথে মিটিং, প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর নজরদারি, তার ফোন কল রেকর্ডস, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া—সবকিছু ঘেঁটে ফেলা হলো। কিন্তু ফলাফল শূন্য। অভিনব চ্যাটার্জী একজন সতর্ক এবং ধূর্ত ব্যবসায়ী ছিলেন।… October 6, 2025 মানচিত্রের বাইরে : অষ্টম পর্ব ছায়ার বিদ্রোহ তাদের নতুন কারাগার তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এই কারাগার শ্যামলগড় গ্রাম নয়। এই কারাগার হলো তাদের নিজেদের শরীর। আর সেই কারাগারের প্রহরী হলো তাদেরই ছায়া। তারা পাথরের মূর্তির মতো স্থির হয়ে বসেছিল। নাটমন্দিরের চাতালে তাদের জ্বালানো আগুনটা এখন আর নিরাপত্তার উৎস ছিল না, বরং হয়ে উঠেছিল এক ভয়ঙ্কর মঞ্চ। সেই মঞ্চের আলোয় তাদের দীর্ঘায়িত… October 5, 2025 অষ্টমীর অঞ্জলি আর তুমি : ষষ্ঠ অধ্যায় নতুন জীবনের বুনন ফাল্গুনের এক পড়ন্ত বিকেলে উত্তরপাড়ার চ্যাটার্জী বাড়ির সেই ঠাকুরদালানেই অরুণ আর রিয়ার বিয়ে হয়েছিল। কোনো জাঁকজমক বা আড়ম্বর ছিল না। শুধু রেজিস্ট্রি ম্যারেজের পর পাড়ার সমস্ত মানুষকে নিয়ে এক বিশাল প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। শুভঙ্করদা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সব ব্যবস্থা করেছিলেন, আর সৌরভও তার বন্ধুদের সাথে হাসিমুখে সবাইকে পরিবেশন করছিল। সেই একই… October 5, 2025 ইতিহাসের আদালত : প্রথম অধ্যায় মুদ্রা এবং মৌনতা কলকাতার সেই সন্ধ্যাটা ছিল এক দমবন্ধ করা অস্বস্তির চাদরে মোড়া। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে প্রতিটি নিঃশ্বাস যেন ফুসফুসের ওপর একটা ভারী বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছিল। শ্রাবণের আকাশটা ছিল অসুস্থ রোগীর মতো বিবর্ণ, সীসার পাতের মতো ধূসর। বৃষ্টির গর্জন ছিল, কিন্তু বর্ষণ ছিল না। এই গুমোট পরিবেশের সঙ্গেই যেন পাল্লা… October 5, 2025 অষ্টমীর অঞ্জলি আর তুমি : পঞ্চম অধ্যায় মধুর অবসানের দিন দশমীর সকালটা একটা ভারী, বিষণ্ণ চাদর মুড়ি দিয়ে আসে। আকাশে-বাতাসে বিদায়ের সুর। অরুণ ঘুম থেকে উঠেছিল ঢাকের এক অন্যরকম বোলে। নবমীর রাতের সেই উন্মত্ত, দ্রুত লয়ের বাদ্যি আজ আর নেই। তার বদলে বাজছে এক ধীর, বিষণ্ণ সুর—বিসর্জনের সুর। সেই সুরটা যেন গোটা পাড়ার মনের কথা বলছে। উৎসব শেষের বেদনা। অরুণের বুকের ভেতরটা… October 4, 2025 মানচিত্রের বাইরে : সপ্তম পর্ব নরকের পথ রাতের দ্বিতীয় প্রহর তখন। নাটমন্দিরের চাতালে তাদের জ্বালানো আগুনটা কিছুটা দমে এসেছে। কাঠের জ্বলন্ত টুকরোগুলো এখন আর উজ্জ্বল শিখা নয়, বরং গনগনে অঙ্গারের মতো জ্বলছে, যা থেকে একটা নিস্তেজ, রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়ছে। এই আলোয় চারপাশের অন্ধকার আরও গভীর, আরও দুর্ভেদ্য বলে মনে হচ্ছিল। রাতের সেই অশুভ সুরটা আপাতত থেমে গিয়েছিল, কিন্তু তার… October 3, 2025

Share this story

Comments

Discussion

No comments

Please sign in to join the discussion