বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া এবং ট্র্যাজেডির পরিণতি
বিশ্বাসঘাতকতার দলিল এবং নবাব মীর কাসিমের 'আর্থিক ফর্মুলা' যখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলো, তখন সারা বিশ্বে ঝড় উঠল। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ এবং বিহারের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হলো। যে তিন জমিদার পরিবারের পূর্বপুরুষদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য বাংলার স্বাধীনতা ডুবেছিল, তাদের আধুনিক উত্তরসূরিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলো। রণজিৎ চৌধুরীর সমস্ত ব্যবসা এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হলো।
রণজিতের চক্রের মধ্যে থাকা অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও ধরা পড়লেন। প্রমাণ হলো, তারা রণজিতের পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অপরাধে যুক্ত ছিলেন। রণজিতের গ্রেপ্তার ছিল কেবল একটি চক্রের সমাপ্তি নয়, এটি ছিল আড়াইশো বছরের পুরোনো একটি পাপের প্রায়শ্চিত্ত।
ইতিহাসবিদরা নবাবের প্রজ্ঞা দেখে হতবাক হয়ে গেলেন। মীর কাসিম শুধু একজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী অর্থনীতিবিদ। তাঁর 'রৌপ্য-ভিত্তিক স্থিতিশীলতা' ফর্মুলাটি আধুনিক বিশ্বেও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার একটি নতুন মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে লাগল। এই দলিলগুলো প্রমাণ করল, বাংলার পতন ছিল সামরিক দুর্বলতা নয়, বরং অর্থনৈতিক দূরদর্শিতার ওপর এক কাপুরুষোচিত বিশ্বাসঘাতকতা।
গ্রেপ্তার পরবর্তী রাজনৈতিক ও আইনি লড়াই: রণজিতের প্রতিরোধ ও শেষ হুমকি
রণজিৎ চৌধুরী গ্রেপ্তারের পরেও তার অহংকার ধরে রেখেছিলেন। তিনি নিজেকে কোনো সাধারণ অপরাধী হিসেবে দেখতে অস্বীকার করেন। তাঁর আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে, নবাবের দলিলগুলি আড়াইশো বছরের পুরোনো, তাই আধুনিক আদালতে এর আইনি বৈধতা নেই।
তবে অনির্বাণ ও ইরার যৌথ গবেষণা এবং ফারুক আহমেদের ঐতিহাসিক সাক্ষ্য এই যুক্তি খণ্ডন করে দিল। তারা প্রমাণ করলেন যে, রণজিতের চক্র বহু বছর ধরে এই দলিলের ভিত্তিতেই তাদের অবৈধ অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছে এবং দেশীয় অর্থনীতির বিরুদ্ধে কাজ করেছে।
রণজিৎকে যখন তার ইয়াট থেকে নিয়ে আসা হয়, তখন তিনি কেবল একটি কথাই বলেছিলেন: "নতুন বিশ্বব্যবস্থা হয়তো আজকের জন্য স্থগিত হলো, কিন্তু বাংলার বিশ্বাসঘাতক রক্ত চিরকাল তার সুযোগ খুঁজবে, ডক্টর রায়।"
তাঁর এই কথা অনির্বাণ এবং ইরাকে সতর্ক করে দিল। তারা বুঝলেন, রণজিৎ হয়তো বন্দী, কিন্তু তার আদর্শ এবং তার বংশধরদের লোভ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি। এই কারণেই নবাবের সত্যকে কেবল উন্মোচন করলেই চলবে না, তাকে রক্ষা করার জন্যও একটি স্থায়ী মঞ্চ তৈরি করতে হবে।
অনির্বাণ ও ইরার অংশীদারিত্ব: ইনস্টিটিউটের জন্ম এবং নতুন ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত
ড. অনির্বাণ রায় ফিরে এলেন কলকাতায়। বর্ষণমুখর সন্ধ্যায়, যেখানে রহস্যের শুরু হয়েছিল, সেখানেই তিনি শেষ করলেন তাঁর যাত্রা। সিন্দুকটি এখন একটি সংগ্রহশালায়।
নবাবের 'শেষ চাল' সফল হয়েছিল। আড়াইশো বছর ধরে তিনি সেই সত্যকে এমনভাবে লুকিয়ে রেখেছিলেন, যাতে কেবল সঠিক সময়ে, সঠিক ব্যক্তির হাতে তা উন্মোচিত হতে পারে।
অনির্বাণ এবং ইরা মিলে নবাবের ফর্মুলার ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন 'ঐতিহাসিক অর্থনীতি ইনস্টিটিউট' প্রতিষ্ঠা করলেন।
কিন্তু সুখ বেশিদিন স্থায়ী হলো না। রণজিৎ চৌধুরী গ্রেপ্তার হওয়ার সময় যে দলিলগুলো ডিজিটালভাবে প্রকাশিত হয়েছিল, তার অর্থনৈতিক চার্টের কিছু জটিল মূল সঙ্কেত (Key Ciphers) ইচ্ছাকৃতভাবে ঝাপসা (Blurred) ছিল। অনির্বাণ প্রথমে ভেবেছিলেন, ক্যামেরা সংযোগের সমস্যা। কিন্তু ইরা পরীক্ষা করে দেখল, ঝাপসা অংশগুলো ছিল একটি দ্বিতীয় স্তরের এনক্রিপশন, যা কেবল আসল, শারীরিক দলিল (Original Chormopotro) থেকেই উদ্ধার করা সম্ভব।
রণজিৎ কেবল একজন বস ছিল না, সে ছিল একটি বৃহত্তর, পুরোনো বৈশ্বিক সিন্ডিকেট-এর (The Syndicate) একজন আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মাত্র। এই সিন্ডিকেটের উৎপত্তি সেই ইউরোপীয় ব্যবসায়ী এবং দেশীয় দালালদের বংশধরদের নিয়ে, যারা পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে বিপুল সম্পত্তির অধিকারী হয়েছিল। রণজিতের ব্যর্থতা তাদের চরম সতর্কতা মোড (Protocol Omega) সক্রিয় করে তুলল।
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion