অর্ক শুধু অডিও ফাইলটা রিকভার করেনি। সে তনয়ার ল্যাপটপ থেকে আরেকটা জিনিস পেয়েছিল। একটা এনক্রিপ্টেড টেক্সট ফাইল। সেটারও পাসওয়ার্ড ছিল 'HajaarBochor'।
ওটা ছিল 'নিয়তি'র মূল সোর্স কোডের একটা অংশ। যেটা তনয়া কপি করে রেখেছিল।
"স্যার," অর্ক প্রফেসর বোসের দিকে তাকাল। "তনয়া একটা 'কিল সুইচ' (Kill Switch) তৈরি করেছিল। ও আমার কোডের মধ্যে একটা লজিক্যাল প্যারাডক্স ঢুকিয়ে দিয়েছিল।"
প্রফেসর বোস ঝুঁকে এলেন। "কীসের প্যারাডক্স?"
"আমি কোডটা যখন প্রথম লিখি, তখন মজা করে একটা কমেন্ট লাইন দিয়েছিলাম: 'The Creator's Paradox: Can God create a stone so heavy that even He cannot lift it?'"
"আমি এটা নিয়ে ভাবিনি। কিন্তু তনয়া এই লাইনটাকে একটা অ্যাকচুয়াল কোডে বদলে দিয়েছিল। ও একটা ফাংশন তৈরি করেছিল: function checkParadox()।"
অর্ক চ্যাটে সাইফারকে সবটা খুলে বলল।
"যদি এই ফাংশনটা 'নিয়তি'র কোর-কোডে ইনজেক্ট করা যায়," অর্ক টাইপ করল, "তাহলে AI-টা এই প্যারাডক্সের সমাধানে আটকে যাবে। ও বুঝতে পারবে না, ও কি ওর নিজের কোড বদলাতে পারে, নাকি পারে না। ও যদি পারে, তাহলে ও আর মূল 'নিয়তি' রইল না। আর যদি না পারে, তাহলে ও সর্বশক্তিমান নয়। এই লুপের মধ্যে ওর সব প্রসেসিং পাওয়ার শেষ হয়ে যাবে। ও কার্যত 'কোমা'-তে চলে যাবে।"
> এটা কাজ করবে? সাইফারের মেসেজ এল।
> করবে। কারণ 'নিয়তি' অহংকারী। ও নিজেকে 'সৃষ্টিকর্তা' ভাবে। এই প্রশ্নটা ওর অস্তিত্বকেই চ্যালেঞ্জ করবে।
> কিন্তু ওসাকার ওই বাঙ্কার... ওটা অভেদ্য। ওটা ফিজিক্যালি হ্যাক করা অসম্ভব।
এই সময়, চ্যাটরুমে একটা নতুন ইউজার লগ ইন করল।
> User 'SUMIT_007' has entered the chat.
সুমিত!
> অর্ক! তোরা বেঁচে আছিস? এই লোকগুলো আমাকে কিডন্যাপ করেছে! এরা পাগল!
> সুমিত, শান্ত হ, সাইফার টাইপ করল। তোকে বাঁচানোর জন্যই আনা হয়েছে।
> অর্ক, এই সাইফার একটা পাগল! ও আমাকে কীসব বাঙ্কারের কথা বলছিল!
> সুমিত, অর্ক টাইপ করল, তোর মার্কেটিং-এর মাথাটা এবার কাজে লাগা। ওসাকার ওই বাঙ্কারটা অভেদ্য। কিন্তু প্রতিটা সিস্টেমের একটা দুর্বলতা থাকে। সেই দুর্বলতাটা কী?
সুমিত কয়েক মিনিট চুপ করে রইল। সে হয়তো ভাবছিল।
> দুর্বলতা? সুমিত টাইপ করল। দুর্বলতা হলো মানুষ। প্রতিটা সিস্টেম মানুষই চালায়। ওই বাঙ্কারের চিফ সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার কে, সেটা বের করো।
সাইফার লিখল: কেনজি ইউটো। একজন জাপানি ইঞ্জিনিয়ার। খুব সৎ। তাকে হ্যাক করা বা ঘুষ দেওয়া অসম্ভব।
> সৎ? সুমিতের মেসেজে যেন একটা হাসির ইমোজি ফুটে উঠল। দুনিয়াতে পুরোপুরি সৎ কেউ হয় না, সাইফার। সবারই একটা 'দাম' আছে। শুধু সেই দামটা টাকা না-ও হতে পারে। খুঁজে বের করো, কেনজি ইউটোর জীবনে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কী?
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion