Episode 11401 words0 views

অধ্যায় ১১: এডিটর

ট্রেনে বসে অর্ক আর রিয়া হাঁপাচ্ছিল। কামরার লোকেরা তাদের দিকে অদ্ভুতভাবে তাকাচ্ছে। "মিস্টার সেনকে ফোন করো," অর্ক বলল। রিয়া ফোন করল। "হ্যালো, স্যার। আমি রিয়া। আমার খুব বড় বিপদ। আমার কাছে... আমার কাছে বাবার কেসের সব প্রমাণ আছে। প্রজেক্ট ফিনিক্স।" ওপাশ থেকে মিস্টার সেনের উত্তেজিত গলা শোনা গেল। "রিয়া! তুমি কোথায়? তুমি ঠিক আছো? কারা তোমার পেছনে লেগেছে?" "স্যার, ওরা নিরভানা কর্পোরেশনের লোক। ওরা বাবাকে খুন করেছিল। ওরা আমাকেও মারতে চায়।" "শান্ত হও। তুমি এক্ষুনি আমার অফিসে চলে এসো। আমি পুলিশকে জানাচ্ছি।" "না!" রিয়া চিৎকার করে উঠল। "পুলিশকে জানাবেন না। ওরা পুলিশের মধ্যেও আছে। স্যার, আপনাকে আমাদের বাঁচাতে হবে।" মিস্টার সেন কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। "ঠিক আছে। তোমরা সোজা আমার কেবিনে চলে আসবে। আমি সব ব্যবস্থা করছি।" তারা সল্টলেকে পৌঁছল। 'দ্য সেন্টিনেল' পত্রিকার অফিসটা একটা বিশাল কাঁচের বিল্ডিং। তারা ভেতরে ঢুকতেই রিসেপশনিস্ট তাদের থামাল। "আপনাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে?" "মিস্টার সেন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন," রিয়া বলল। তারা লিফটে করে এডিটরের ফ্লোরে গেল। মিস্টার সেন, একজন বয়স্ক, গম্ভীর চেহারার লোক, তার কেবিনের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। "ভেতরে এসো। তাড়াতাড়ি।" তারা ভেতরে ঢুকতেই তিনি দরজা লক করে দিলেন। "কী প্রমাণ আছে তোমাদের কাছে?" অর্ক পেনড্রাইভটা তার হাতে দিতে গেল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সে থেমে গেল। চিঠির কথাটা তার মনে পড়ল: "কাউকেই বিশ্বাস কোরো না।" সে পেনড্রাইভটা পকেটে রেখে দিল। "কোথায়?" মিস্টার সেন জিজ্ঞেস করলেন। "আগে বলুন, আমরা এখানে নিরাপদ?" অর্ক বলল। "অবশ্যই। এটা আমার অফিস।" "রিয়া," অর্ক রিয়ার দিকে তাকাল। "তুমি কি তোমার বাবার এই বন্ধুকে পুরোপুরি বিশ্বাস করো?" রিয়া ইতস্তত করল। "স্যার..." মিস্টার সেন হাসলেন। "অরুণাভ বোস, তাই তো? তোমার স্মৃতিভ্রংশ হলেও, তোমার সন্দেহবাতিক যায়নি। ভালো। রিয়া, তোমার বাবাকে আমি ছেলের মতো ভালোবাসতাম। আমি তোমাদের সাহায্য করব।" অর্ক তবুও দ্বিধা করছিল। সে তার ব্যাগ থেকে ল্যাপটপটা বের করল। "আমি আপনাকে ফাইলগুলো দেখাতে পারি। কিন্তু পেনড্রাইভটা আমার কাছেই থাকবে।" "তাই সই।" অর্ক ল্যাপটপে ফাইলগুলো খুলল। মিস্টার সেন ফাইলগুলো এক এক করে দেখতে লাগলেন আর তার মুখের রঙ বদলাতে লাগল। "সর্বনাশ!" তিনি বললেন। "এটা তো ওয়াটারগেটের থেকেও বড় স্ক্যান্ডাল! ওরা গোটা শহরের মস্তিষ্ক কন্ট্রোল করতে চাইছে!" "স্যার, আপনাকে এটা পাবলিশ করতে হবে," রিয়া বলল। "অবশ্যই করব। এটা তো ব্রেকিং নিউজ!" মিস্টার সেন উত্তেজিত। "কিন্তু তার আগে তোমাদের দুজনকে নিরাপদ জায়গায় সরাতে হবে। নিরভানার হাত অনেক লম্বা।" "আমরা কোথায় যাব?" অর্ক জিজ্ঞেস করল। "আমার একটা ফার্মহাউস আছে, শহরের বাইরে। তোমরা আপাতত ওখানে চলে যাও। আমি এই নিউজটা ব্রেক করার ব্যবস্থা করছি।" মিস্টার সেন একটা ফোন তুললেন। "সিকিউরিটি? আমার গাড়িটা রেডি করো। দুজন গেস্টকে এয়ারপোর্টে ছাড়তে হবে।" তিনি অর্কর দিকে তাকিয়ে হাসলেন। "ওদেরকে ভুল পথে চালিত করার জন্য।"

Share this story

Comments

Discussion

No comments

Please sign in to join the discussion