প্যাসেজটা অন্ধকার আর স্যাঁতসেঁতে। ধুলো আর মাকড়সার জালে ভর্তি।
তারা মোবাইল ফোনের আলোয় এগোচ্ছিল। সুড়ঙ্গটা যেন শেষই হচ্ছে না। অবশেষে তারা একটা ছোট দরজার সামনে এসে পৌঁছল।
অর্ক দরজাটা ঠেলল।
তারা একটা গ্যারাজের মধ্যে এসে পড়ল। গ্যারাজটা ধুলোয় ঢাকা। একটা পুরনো অ্যাম্বাসাডর গাড়ি চাদরে ঢাকা।
"এটা কাজ করবে?" রিয়া জিজ্ঞেস করল।
"জানি না। চেষ্টা করে দেখতে হবে।"
অর্ক ড্রাইভিং সিটে বসল। তার হাত কাঁপছিল। সে কি গাড়ি চালাতে জানে?
সে চাবিটা ইগনিশনে ঢোকাল। ইঞ্জিনটা কয়েকবার খকখক করে কেশে উঠে চালু হয়ে গেল।
"চলো!"
অর্ক সজোরে গ্যারাজের দরজাটা ভেঙে গাড়িটা রাস্তায় বের করে আনল। বসুর লোকেরা কিছু বোঝার আগেই তারা তীব্র গতিতে এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে গেল।
রিয়া পেছনে তাকিয়ে দেখল। কালো SUV দুটো তাদের পিছু নিয়েছে।
"ওরা আমাদের তাড়া করছে, অর্ক!"
"বেল্ট বেঁধে নাও!"
শুরু হলো এক ভয়ঙ্কর গাড়ির রেস। অর্ক পাগলের মতো গাড়ি চালাচ্ছিল। তার স্মৃতি হয়তো মুছে গেছে, কিন্তু তার মাসল মেমরি (Muscle Memory) এখনও সতেজ। সে খুব ভালো ড্রাইভার।
সে শহরের ঘিঞ্জি গলি দিয়ে গাড়ি ছোটাতে লাগল। একটা SUV তাদের প্রায় ধরে ফেলেছিল, কিন্তু অর্ক একটা সরু গলিতে গাড়ি ঢুকিয়ে দিল, যেখানে SUV-টা ঢুকতে পারল না।
কিন্তু অন্য SUV-টা তাদের পেছনে লেগেই রইল।
"রিয়া, তোমার এডিটরের অফিস কোথায়?"
"সল্টলেক। সেক্টর ফাইভ।"
"অনেক দূর। ওরা আমাদের ওখানে পৌঁছানোর আগেই ধরে ফেলবে।"
"তাহলে কী করব?"
"আমাদের ওদেরকে ফাঁকি দিতে হবে।"
অর্ক গাড়িটা একটা বাজারের মধ্যে ঢুকিয়ে দিল। মানুষজন ভয়ে চিৎকার করে সরে যাচ্ছে।
SUV-টাকেও বাজারের মধ্যে ঢুকতে হলো। কিন্তু ভিড়ের কারণে সেটার গতি কমে গেল।
অর্ক এই সুযোগে গাড়িটা একটা বস্তির মধ্যে ঢুকিয়ে দিল। তারপর একটা জায়গায় গাড়িটা দাঁড় করিয়ে বলল, "নামো! তাড়াতাড়ি!"
তারা গাড়ি থেকে নেমে বস্তির সরু গলির মধ্যে দিয়ে দৌড়াতে শুরু করল। বসুর লোকেরা গাড়ি থেকে নেমে তাদের পেছনে দৌড়াল।
তারা একটা রেললাইনের ধারে এসে পড়ল। একটা লোকাল ট্রেন সবে প্ল্যাটফর্ম ছাড়ছে।
"অর্ক, ট্রেনটা!"
তারা শেষ মুহূর্তে চলন্ত ট্রেনের একটা কামরায় উঠে পড়ল। বসুর লোকেরা প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে রাগে গজরাতে লাগল।
তারা আপাতত নিরাপদ।
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion