অয়নের জীবন এখন দুটো ভাগে বিভক্ত: দিনের আলোয় প্রসেনজিৎ-এর সফল ব্যবসায়ী, আর রাতের অন্ধকারে সেই ট্রেনের ঋণী যাত্রী। তার সফল ব্যবসা যখন তাকে খ্যাতি এনে দেয়, তখন সে নিজেকে প্রতারক মনে করে। কারণ এই সাফল্য তার নয়, বন্ধুর অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা। সে আর কখনো কোনো আয়না দেখে না, কারণ সেখানে সে নিজের ছায়ার বদলে প্রসেনজিৎ-এর বিষণ্ণ মুখ দেখতে পায়।
ট্রেন আর না এলেও, অয়নের জীবনে তার চিহ্ন রয়ে গেছে। ফুলডুবির পুরোনো রেললাইনের কাছে হাঁটতে গিয়ে সে প্রায়ই একধরনের সূক্ষ্ম নীলচে ধূলি (Blue Schist Dust) দেখতে পায়। এই ধূলিগুলো রেলের পাথরের খাঁজে লেগে থাকে, যা স্বাভাবিক নয়। তার মনে পড়ে গেল, ট্রেনের ভেতরে সেই নীলচে আভা এই রঙেরই ছিল।
এক রাতে, অয়ন আবিষ্কার করল যে এই নীল ধূলিগুলো আসলে এক ধরনের স্থান-কালের ফাটল-এর (Spatial-Temporal Anomaly) অবশেষ। সে এই ধূলি সামান্য সংগ্রহ করে তার ল্যাবে পরীক্ষা করল। এই ধূলিগুলো পৃথিবীর কোনো সাধারণ উপাদানের নয়। এর মধ্যে এমন কিছু কণা রয়েছে, যা সময়ের গতিকে সামান্য হলেও মন্থর করে দেয়।
অয়ন বুঝতে পারল, প্রহরী মিথ্যা বলেনি। ট্রেনটি শুধু অনুতাপের বাহন নয়, এটি একটি বাসনাবাহী Temporal Echo, যা সেই ১৯৫০ সালের দুর্ঘটনার মুহূর্তে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে। ট্রেনের নীলচে আলো ছিল সেই Temporal Field-এর কারণে।
অয়ন নিশ্চিত হলো, ফুলডুবির অভিশাপ দূর হলেও, ট্রেনটি ধ্বংস হয়নি, এটি কেবল অন্য একটি মাত্রায় (Dimension) সরে গেছে। এবং সেই মাত্রায় প্রবেশ করার চাবিকাঠি হলো এই নীল ধূলি।
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion