পরান ডোম রাতুলকে বললো, "কালীপদর আত্মা এখন তোমার পেছনে লেগে আছে। সে তোমার ছায়ার সাথে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তোমার শক্তি কমছে। আজ অমাবস্যা। আজ রাতেই সে তার কাজ শেষ করার চেষ্টা করবে।"
"আমায় কী করতে হবে?"
"আমাদের সেই গুদামে ঢুকতে হবে। সেই ডার্করুমে। কালীপদর বলির যন্ত্রটা খুঁজে বের করে সেটাকে নষ্ট করতে হবে।"
"কিন্তু সেই গুদাম তো তালাবন্ধ," রাতুল বললো।
"তালা ভাঙতে হবে," পরান শান্তভাবে উত্তর দিলো। "আমি তোমার সাথে যাবো। আমার কিছু জিনিস লাগবে।"
পরান তাকে একটা তালিকা দিলো: একটা নতুন মাটির কলসি, গঙ্গার জল, পাঁচটা লোহার পেরেক, একটা হাতুড়ি, কর্পূর, আর এক দিস্তে সাদা ফটোগ্রাফিক পেপার।
"ফটোগ্রাফিক পেপার কেন?" রাতুল অবাক হলো।
"কালীপদর আত্মা এখন নিরাকার। তাকে কোনো একটা আধারে ধরতে হবে। সে ক্যামেরাকে ভালোবাসতো। সিলভার হ্যালাইডের (Silver Halide) গন্ধ তার খুব প্রিয়। আমরা সেই পেপারেই তাকে 'ডেভেলপ' করবো, তারপর নষ্ট করবো।"
রাতুল সারাদিন ধরে সব জিনিস জোগাড় করলো। তার হাত-পা কাঁপছিল। সে বারবার আয়নায় তাকাচ্ছিল। তার মনে হচ্ছিল, আয়নায় তার প্রতিবিম্বটা যেন একটু দেরিতে নড়াচড়া করছে। তার নিজের ছায়াটাকেও যেন বেশি গাঢ়, বেশি লম্বা লাগছে।
রাত এগারোটা। রাতুল আর পরান ডোম সেই এসপ্ল্যানেডের গলির মুখে এসে দাঁড়ালো। চায়ের দোকানটা বন্ধ। চারদিক নিস্তব্ধ।
"দাদু, আপনার ভয় করছে না?" রাতুল জিজ্ঞেস করলো।
পরান ডোম হাসলো। "আমি শ্মশানে থাকি। আমার ভয়ডর নেই। ভয়কে জয় করতে হয়, বাবু। চলো।"
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion