Episode 11197 words1 views

একাদশ অধ্যায়: ছায়াপথ স্টুডিয়ো

গলিটার ভেতরে আজ আর শুধু স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ নয়। একটা তীব্র পচা গন্ধ। যেন অনেক পুরনো কোনো ক্ষতের গন্ধ। খিলানের কাছে এসে তারা দেখলো, গুদামের দরজায় একটা বিশাল, মরচে ধরা তালা ঝুলছে। "দরজা থেকে সরো," পরান বললো। সে তার ঝোলা থেকে একটা ছোট হাতুড়ি আর ছেনি বের করলো। কয়েকটা জোরালো আঘাতে সে তালার হুড়কোটা ভেঙে ফেললো। ক্যাঁ...চ... একটা কর্কশ শব্দ করে দরজাটা খুলে গেলো। ভেতরটা মিশকালো অন্ধকার। আর সেই পচা গন্ধটা হাজার গুণ বেড়ে গেলো। রাতুল টর্চ জ্বেলে ভেতরে ঢুকলো। এটা একটা বিশাল হলঘর। এককালে হয়তো স্টুডিয়ো ছিল। সিলিং থেকে ঝুলছে মাকড়সার জাল। একপাশে একটা ভাঙা ভিক্টোরিয়ান সোফা, পর্দাগুলো ছিঁড়ে ঝুলছে। আর দেয়ালগুলো... দেয়ালগুলো ভর্তি ফ্রেমে বাঁধানো ছবি। রাতুল টর্চ ফেলে ছবিগুলো দেখলো। বেশিরভাগই পোট্রেট। সাহেব-মেমদের। কিন্তু কিছু ছবি দেখে তার গা শিউরে উঠলো। পোস্ট-মর্টেম ফটোগ্রাফি। মৃত শিশুদের ছবি, তাদের মায়েরা কোলে নিয়ে বসে আছে, যেন তারা ঘুমোচ্ছে। "এগুলো নয়," পরান বললো। "ডার্করুমটা খোঁজো। সেটা নিশ্চয়ই ভেতরের দিকে হবে।" তারা হলঘর পেরিয়ে একটা সরু প্যাসেজে ঢুকলো। প্যাসেজের শেষে একটা ছোট দরজা। দরজার ওপর একটা বিবর্ণ সাইনবোর্ড এখনও ঝুলছে: "ডার্করুম। প্রবেশ নিষেধ।" দরজাটা ভেজানো ছিল। রাতুল দরজায় হাত রাখতেই সেটা খুলে গেলো। ভেতরে কোনো পচা গন্ধ নেই। বরং একটা তীব্র রাসায়নিক গন্ধ। যেন এইমাত্র কেউ ছবি ডেভেলপ করে গেলো।

Share this story

Comments

Discussion

No comments

Please sign in to join the discussion