পরদিন সকালে রাতুল এসপ্ল্যানেডের ওই গলিতে গিয়েছিল। চায়ের দোকানদার দাদু তাকে দেখে হাসলো। "কী বাবু, কাল রাতে খুব ঝড় হলো, তাই না?"
রাতুল শুধু হাসলো। সে খিলানটার দিকে তাকালো। আজ গলিটাকে আর স্যাঁতস্যাঁতে বা অশুভ মনে হচ্ছিল না। শুধু একটা পুরনো, ভাঙা গলি।
সে তার বাবার অ্যানালগ ক্যামেরা থেকে ফিল্মের রোলটা বের করে ডেভেলপ করতে দিয়েছিল। তার এক বন্ধুর স্টুডিও ছিল ভবানীপুরে, সেখানেই সে ডার্করুমে কাজ করতো।
বিকালে সে ছবিগুলো হাতে পেলো।
রোলটার বেশিরভাগ ছবিই পুরনো, তার বাবার তোলা। শেষ ছবিটা ছিল তার।
ফ্ল্যাশের তীব্র আলোয় তোলা তার ঘরের ছবি। টেবিল, চেয়ার, বুকশেলফ—সব স্পষ্ট।
আর যেখানটায় ছায়ামূর্তিটা দাঁড়িয়ে ছিল, সেখানে কিচ্ছু নেই।
ছবিটা একেবারে পরিষ্কার।
রাতুল একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। তাহলে সত্যিই মুক্তি পেয়েছে অমিশা। ডিজিটাল সেন্সরের বাঁধন কেটে সে অ্যানালগ ফিল্মের আলোয় ধরা দিয়ে মিলিয়ে গেছে।
রাতুল বোস তার ডিজিটাল গিয়ার সব বেচে দিলো। যা দাম পেলো, তাই দিয়ে বেহালার সেই ফ্ল্যাটেই সে একটা ছোট পোট্রেট স্টুডিয়ো খুললো। তার বাবার সেই পুরনো ইয়াশিকা ক্যামেরাটা দিয়ে সে এখন মানুষের মুখের ছবি তোলে। দিনের আলোয়। তার স্টুডিয়োর নাম সে দিলো "আলোর পথ"।
সে ভেবেছিল, দুঃস্বপ্ন শেষ।
কিন্তু দুঃস্বপ্নের সবে শুরু হয়েছিল।
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion