"আলোর পথ" স্টুডিও ভালোই চলছিল। রাতুল এখন শুধু দিনের আলোয়, ফিল্মে ছবি তোলে। সাদা-কালো পোট্রেট। তার ছবির মধ্যে একটা অদ্ভুত গভীরতা আসতে শুরু করলো, যা আগে ছিল না।
একমাস কেটে গেছে। সে প্রায় ভুলতেই বসেছিল সেই রাতের ঘটনা।
সেদিন এক ভদ্রমহিলা এসেছিলেন তার মেয়ের ছবি তোলাতে। মেয়েটি বছর পাঁচেকের, খুব মিষ্টি। রাতুল ইয়াশিকা ক্যামেরাটা দিয়ে গোটা দশেক ছবি তুললো।
ফিল্ম ডেভেলপ করে যখন সে ছবিগুলো দেখছিল, তখন তার হাত থেকে ট্রে-টা পড়ে গেলো।
মেয়েটির প্রতিটি ছবিতে, তার ঠিক পিছনে, একটা আবছা ছায়া দাঁড়িয়ে আছে।
অমিশার ছায়া নয়। এটা অন্যকিছু। অনেক বেশি লম্বা, অনেক বেশি চওড়া। একটা পুরুষের ছায়া।
রাতুল স্টুডিও বন্ধ করে দিলো। সে বুঝতে পারছিল, অমিশাকে মুক্ত করে সে আরও বড় কোনো ভুল করে ফেলেছে। অমিশা হয়তো ছিল একটা 'সতর্কবার্তা'। আসল সত্তাটা অন্যকিছু।
সেদিন রাতে তার ফ্ল্যাটে আবার সেই খটাস শব্দটা হলো।
সে দেখলো, তার বাবার অ্যানালগ ক্যামেরাটা, যেটা সে টেবিলে রেখেছিল, সেটা নিজে থেকেই মেঝেতে পড়ে গেছে। আর সেটার লেন্সটা... রাতুলের ডিজিটাল ক্যামেরার মতোই ফেটে চৌচির।
আর ঘরের কোণে সেই অন্ধকারটা আবার দানা বাঁধছে। কিন্তু এবার আর সেটা অমিশার মতো কৃশ, দুঃখী ছায়া নয়। এটা বিশাল, ক্রুদ্ধ।
রাতুল স্পষ্ট দেখলো, অন্ধকারের মধ্যে দুটো লাল বিন্দু জ্বলছে।
"কালীপদ," সে ফিসফিস করলো।
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion