Episode 6212 words3 views

ষষ্ঠ অধ্যায়: সংকেতের পাঠোদ্ধার

পরের এক সপ্তাহ অর্ক আর বাড়ি থেকে বেরোলো না। সে আর শম্ভু জ্যাঠা মিলে বাড়ির নিরাপত্তা বাড়ালো। ভাঙা জানলা-দরজাগুলো আপাতত সারানো হলো। বাড়িটা একটা দুর্গের চেহারা নিলো। অনিমেষবাবু প্রায় প্রতিদিনই আসতেন। পুঁথিটা এখন তার কাছেই থাকতো। তিনজনে মিলে সেই সাংকেতিক লিপির ওপর ঝুঁকে পড়তেন। "পেয়েছি!" একদিন বিকেলে অনিমেষবাবু প্রায় চিৎকার করে উঠলেন। "এই দেখুন, অর্কবাবু। এই সংকেতটা বারবার আসছে।" তিনি একটা পাতার দিকে নির্দেশ করলেন। সেখানে সেই মাছের চিহ্ন, একটা সাপের চিহ্ন আর একটা ত্রিশূল। "এর মানে কী?" "নাগবর্মী লিপি অনুযায়ী," অনিমেষবাবু উত্তেজিতভাবে বললেন, "মাছ মানে জল বা জলাশয়। সাপ মানে পথ বা সিঁড়ি, যা সাধারণত মাটির নিচে যায়। আর ত্রিশূল মানে... শিব। আপনাদের বাড়ির কোথাও কি পুরনো শিব মন্দির আছে?" "আছে!" শম্ভু জ্যাঠা বললেন। "বাড়ির সীমানার একেবারে কোণে, বাগানের ভেতরে। একটা ভাঙা শিব মন্দির। লোকে বলে, ওটা নাকি ঈশ্বরচন্দ্রের ঠাকুমা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সাপ-খোপের ভয়ে ওদিকে কেউ যায় না।" "চলুন!" অর্ক উঠে দাঁড়ালো। তিনজনে মিলে বাগানের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে সেই মন্দিরে পৌঁছালো। মন্দিরটা প্রায় ধ্বংসস্তূপ। একটা প্রকাণ্ড বট গাছ মন্দিরটাকে গিলে ফেলেছে। তার ঝুরিগুলো ছাদ ফুঁড়ে নেমে এসেছে। ভেতরে একটা শিবলিঙ্গ। তার ঠিক পেছনে, দেওয়ালের একটা পাথরে সেই একই চিহ্ন খোদাই করা— মাছ, সাপ, ত্রিশূল। অর্ক পাথরটা ভালো করে দেখলো। ওটা আলগা। সে আর শম্ভু জ্যাঠা মিলে ধাক্কা দিতেই পাথরটা একপাশে সরে গেলো। ভেতরে একটা ছোট্ট কুঠুরি। একটা মরচে ধরা লোহার বাক্স।

Share this story

Comments

Discussion

No comments

Please sign in to join the discussion