Episode 8253 words4 views

অষ্টম অধ্যায়: বীরেন্দ্রনারায়ণের পদক্ষেপ

"আমাদের এক্ষুনি ওখানে যেতে হবে," অর্ক বললো। "না, বাবু," শম্ভু জ্যাঠা বাধা দিলেন। "এখন রাত। দিঘির ওদিকটা ভালো নয়। আর বীরেন্দ্রনারায়ণের লোক আমাদের ওপর নজর রাখছে। সকালের জন্য অপেক্ষা করুন।" অর্ক অনিচ্ছাসত্ত্বেও রাজি হলো। তারা মূর্তি আর নকশাটা নিয়ে সাবধানে বাড়ি ফিরে এলো। কিন্তু তারা জানতো না, তাদের সব পদক্ষেপ কেউ একজন দূর থেকে দেখছিল। মেঘডুম্বুর চা বাগানের বাংলোয়, বীরেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী তার কাঁচের জানলা দিয়ে চা বাগানের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। হাতে দামী হুইস্কির গ্লাস। "স্যার," তার ম্যানেজার রতন ভেতরে ঢুকলো। "ওরা মন্দিরের ভেতরের বাক্সটা খুঁজে পেয়েছে। আমাদের লোক দূর থেকে দেখেছে।" বীরেন্দ্রনারায়ণের কপালে একটাও ভাঁজ পড়লো না। তিনি হাসলেন। "পাবেই তো। আমিই তো চেয়েছি ওরা ওটা খুঁজে পাক। পুঁথিটা একটা ফাঁদ, রতন।" "স্যার, ঠিক বুঝলাম না।" "আরে ছোকরা আর্কিটেক্ট," বীরেন্দ্রনারায়ণ হাসলেন। "ওকে দিয়ে আমি আসল গুপ্তধনের দরজাটা খোলাবো। আমার প্রপিতামহ বীরভদ্র চৌধুরী ওই ঈশ্বরচন্দ্রকে খুন করে শুধু বাড়ির দখল পেয়েছিলেন, কিন্তু আসল রত্ন—দেবীর অষ্টধাতুর প্রধান মূর্তিটা—খুঁজে পাননি। তিনি ভেবেছিলেন, ওটা ঈশ্বরচন্দ্র দিঘির জলে ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু পাননি। ওটা ওই ঈশ্বরচন্দ্র কোথাও লুকিয়ে রেখেছিল।" "কিন্তু ওই পুঁথি, ওই নকশা?" "ওগুলো সব আমার প্রপিতামহের তৈরি করা। নকল। আসল পুঁথিটা তিনি পুড়িয়ে ফেলেছিলেন। তিনি জানতেন, একদিন ঈশ্বরচন্দ্রের বংশধর আসবে। তাই এই নকল পুঁথি, নকল সূত্র রেখে দিয়েছিলেন। যাতে সে গুপ্তধনের লোভে এসে নিজেই আসল জায়গার সন্ধান দেয়।" "কীভাবে?" "ওই ছোকরা এখন ভাবছে সুড়ঙ্গটা দিঘির দিকে গেছে। সে কাল সকালে ওখানে যাবে। আর আমাদের লোক তাকে অনুসরণ করবে। ঈশ্বরচন্দ্র নিশ্চয়ই আসল সূত্রটা দিঘির কাছেই কোথাও রেখে গেছে। ওই দিঘিটাই হলো চাবিকাঠি।" বীরেন্দ্রনারায়ণ হুইস্কিতে চুমুক দিলেন। "মাছকে ধরতে গেলে টোপ ফেলতে হয়, রতন। ওই ছোকরা হলো আমার টোপ।"

Share this story

Comments

Discussion

No comments

Please sign in to join the discussion