দগ্ধ বনের যাত্রা ছিল দীর্ঘ ও ভয়ানক। এটি শহরের বাইরে একটি দুর্গম অঞ্চলে অবস্থিত, যা স্যাঁতসেঁতে জলাভূমি আর উঁচু, আগাছায় ভরা।
পথ চলতে চলতে দেবু-দা চন্দ্রিমা সম্পর্কে আরও তথ্য দিলেন। "চন্দ্রিমা একসময় রূপেনের ছাত্রী ছিল। তাদের দুজনেরই লক্ষ্য ছিল কালিকা শক্তি, কিন্তু রূপেন চেয়েছিলেন আত্মশুদ্ধি, আর চন্দ্রিমা চেয়েছিল ক্ষমতা। যখন রূপেন তাকে থামাতে যান, চন্দ্রিমা অভিশাপ দেয়: রায়চৌধুরী বংশের রক্তে এক শুদ্ধ আত্মার জন্ম হবে, যার আলো তার মুক্তি ঘটাবে।"
তারা যখন দগ্ধ বনের ভেতরে প্রবেশ করল, তখন আবহাওয়া পাল্টে গেল। চারপাশের গাছগুলো সব শুকনো, পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া, যেন শত শত বছর আগে কোনো ভয়ানক আগুন সব গ্রাস করেছিল। মাটির নিচে এখনও সেই পোড়া গন্ধ।
মন্দিরটি ছিল একটি ছোট, ভগ্নদশা মন্দির, যা অর্ধেক মাটিতে চাপা পড়ে আছে। মন্দিরের চূড়ায় কোনো পতাকা বা প্রতীক নেই, শুধু দুটি পাথরের শিলা, যা মানুষের মাথার খুলির মতো দেখতে।
ভেতরে ঢুকতেই দেবু-দা বললেন, "অর্ণব, রূপেন জানত কেউ তার ডায়েরি খুঁজে পাবে। সে এই মন্দিরের ভেতরেই 'শুদ্ধ মন্ত্রের' সূত্র রেখে গেছেন। কিন্তু তা পেতে হলে আমাদের তার তিনটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।"
অর্ণব অবাক হলো। "পরীক্ষা?"
"হ্যাঁ," দেবু-দা ডায়েরির একটি পাতায় খোদাই করা একটি প্রতীক দেখে বললেন। "এই প্রতীকগুলো হলো মন্ত্রের চাবিকাঠি। রূপেন লিখেছিলেন, 'যে শুদ্ধ মন নিয়ে আলোকের সন্ধানে আসে, সে-ই এ পথের যোগ্য'।"
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion