Episode 14226 words2 views

১৪. শেষ প্রস্তুতি

ভূতের চতুর্দশীর আর মাত্র একদিন বাকি। আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা। চারপাশের বাতাস এত ভারী যে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। অর্ণব বুঝতে পারল, সোমাই সেই 'শুদ্ধ মন'। একমাত্র তার নিঃশর্ত মাতৃত্বের ভালোবাসাই চন্দ্রিমা ডাইনির কালো শক্তিকে ধ্বংস করতে পারে। অর্ণব সোমাকে সব বলল। বিমলের ঘটনা, রূপেনের ডায়েরি, কমলার সমাধি, এবং পাথরের ফলকের বার্তা। সোমা প্রথমে হতবাক, তারপর রাগে ফেটে পড়ল। "আমি এসব ভণ্ডামি বিশ্বাস করি না! তুমি আমাকে পুড়িয়ে মারতে চাইছ? আমি আমার মেয়েকে নিয়ে এক্ষুনি চলে যাব!" "সোমা! আমি তোমার জীবন বাজি ধরছি না, আমি তোমার মাতৃত্বের শক্তিকে বাজি ধরছি," অর্ণব শান্তভাবে বোঝাল। "চন্দ্রিমা আমাদের ছাড়বে না। যদি তুমি সেই মন্ত্র উচ্চারণ করতে পারো, তবেই মিষ্টি বাঁচবে। মন্ত্রটা তোমার ভালোবাসা।" অর্ণব দহলি ঘরের মেঝে খুঁড়ে কমলার সমাধির শ্বেত পাথরটি পরিষ্কার করল। পাথরটি ছিল একদম নিশ্ছিদ্র, কিন্তু ১৪ নম্বর কুলুঙ্গির ফাটলটি সেই পাথরের উপর গিয়ে শেষ হয়েছে। ঠাকুমা এসে অর্ণবের হাত ধরলেন। "মন্ত্রটি হলো: 'জ্যোতির্লোকে শুদ্ধাত্মনঃ, অন্ধকারের নিবৃত্তি করো। মাতৃশক্তির দহন'। রূপেন এই মন্ত্রের কেবল প্রথম অংশটি লিখেছেন, বাকিটা সোমাকে তার হৃদয় থেকে বলতে হবে। বাকি অংশটা হলো মিষ্টির প্রতি তার ভালোবাসা।" অর্ণব সোমার দিকে তাকিয়ে বলল, "তুমি শুধু প্রথম অংশটি জোরে উচ্চারণ করবে। তারপর যা তোমার মন থেকে আসে, তা বলবে। সেটাই হবে চন্দ্রিমা ডাইনির চিরন্তন বাঁধন।" অর্ণব তার পরিকল্পনা বলল: ঠিক রাত বারোটায়, যখন ভূতের চতুর্দশী শুরু হবে, তখন অর্ণব ১৪ নম্বর কুলুঙ্গিতে প্রদীপটি জ্বালাবে। সোমা সেই প্রদীপের শিখার দিকে তাকিয়ে মন্ত্র উচ্চারণ করবে।

Share this story

Comments

Discussion

No comments

Please sign in to join the discussion