মিষ্টিকে অজ্ঞান অবস্থায় তার বিছানায় পাওয়া গেল। সে অক্ষত, কিন্তু ভয়ে কাঁপছে। তার শরীর শীতল হয়ে আছে, যেন তার ভেতর থেকে কিছু একটা জোর করে টেনে নেওয়া হয়েছিল। তার চোখে ছিল জলের দাগ, কিন্তু তার মুখে এখন শান্তি ফিরে এসেছে।
পরের সকালে, অর্ণব যখন চা খাচ্ছিল, তখন ঠাকুমা তার পাশে এসে বসলেন। সকালের প্রথম সূর্যের আলোতে ঠাকুমার মুখটা শান্ত দেখাচ্ছিল।
"বিশ্বাস হলো?" ঠাকুমার স্বরে কোনও ব্যঙ্গ ছিল না, ছিল গভীর উপলব্ধি।
অর্ণব মাথা নাড়ল। "এই প্রথাগুলো শুধু গল্প নয়, ঠাকুমা। এগুলো আসলে এক ধরণের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু এই বাঁধন কি চিরস্থায়ী?"
ঠাকুমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, "না অর্ণব। তুই প্রদীপ জ্বালিয়েছিস, কিন্তু তুই জ্বালিয়েছিস তাড়াহুড়োয়, সন্দেহ নিয়ে। রূপেনের ডায়েরিতে আছে, বাঁধন তখনই স্থায়ী হয় যখন সেই কুলুঙ্গিটি পবিত্র, স্থির আলোয় সাতদিন সাতরাত জ্বলে। কিন্তু তুই যখন জ্বালিয়েছিস, তখন ছায়া-প্রেত কুলুঙ্গির দেওয়াল ফাটিয়ে দিয়ে গেছে। ১৪ নম্বর কুলুঙ্গিটা এখন ভাঙা, আর বাঁধন ফুটো।"
অর্ণব দহলি ঘরে ফিরে কুলুঙ্গির দিকে তাকাল। যেখানে প্রদীপটি রাখা ছিল, সেখানে দেওয়াল ফেটে একটি গভীর ফাটল তৈরি হয়েছে। ফাটলটি শুধু দেওয়াল ভাঙেনি, যেন একটি প্রাচীন, রক্তবর্ণ প্রতীক সেই ফাটলের চারপাশে খোদাই হয়ে গেছে—মুক্তি আর প্রতিশোধের প্রতীক। ফাটলের ভেতরে জমাট অন্ধকার।
ঠাকুমা বললেন, "চন্দ্রিমা এখন দুর্বল। কিন্তু সে জানে বাঁধন ভঙ্গুর। আগামী ভূতের চতুর্দশীর আগে যদি এই কুলুঙ্গিকে আবার গাঁথা না যায় এবং নতুন প্রথায় সেই শক্তি পুনরুদ্ধার না করা যায়, তবে সে আর মিষ্টিকে নয়, গোটা বংশকে গ্রাস করবে। ডায়েরিতে লেখা আছে, কেবল একটি 'শুদ্ধ মন্ত্র' দিয়ে এই বাঁধনকে চিরতরে শক্ত করা যায়, যা রূপেন শেষ মুহূর্তে গোপন করে গিয়েছিলেন। তিনি সেই মন্ত্রটি ডায়েরিতে লেখেননি, কারণ তিনি চাননি কোনো অযোগ্য হাতে পড়ুক।"
অর্ণবের সামনে এখন এক নতুন দায়িত্ব। যুক্তিবাদী অর্ণব এখন তার বংশের রক্ষক, এক অভিশাপের নতুন শিকারী। তার হাতে এক বছর সময়। সে মিষ্টিকে কোলে তুলে নিল। তার হাসিটা এখনও নিষ্পাপ, কিন্তু অর্ণবের চোখে এখন ভয় নয়, জেদ।
"ঠাকুমা, রূপেনের ডায়েরিটা আমাকে দাও। এই অভিশাপের শুরুটা যেমন মানুষ করেছিল, শেষটাও মানুষই করবে। সেই 'শুদ্ধ মন্ত্র' আমি খুঁজে বের করবই।"
গল্প শেষ হলো না, কেবল শুরু হলো। অর্ণব জানে, আগামী বছর ভূতের চতুর্দশী তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন রাত হতে চলেছে। তাকে জানতে হবে, চন্দ্রিমা ডাইনিকে বাঁধনমুক্ত করে তাকে চিরতরে ভস্ম করার প্রকৃত প্রাচীন মন্ত্র কী? এই কুলুঙ্গির ফাটলই কি সেই রহস্যের চাবিকাঠি? অর্ণবকে এখন যুক্তির জগৎ ছেড়ে তন্ত্রের প্রাচীন জগতে পা রাখতে হবে।
অর্ণবের সামনে এখন এক নতুন দায়িত্ব। যুক্তিবাদী অর্ণব এখন তার বংশের রক্ষক, এক অভিশাপের নতুন শিকারী। তার হাতে এক বছর সময়। সে মিষ্টিকে কোলে তুলে নিল। তার হাসিটা এখনও নিষ্পাপ, কিন্তু অর্ণবের চোখে এখন ভয় নয়, জেদ।
"ঠাকুমা, রূপেনের ডায়েরিটা আমাকে দাও। এই অভিশাপের শুরুটা যেমন মানুষ করেছিল, শেষটাও মানুষই করবে। সেই 'শুদ্ধ মন্ত্র' আমি খুঁজে বের করবই।"
গল্প শেষ হলো না, কেবল শুরু হলো। অর্ণব জানে, আগামী বছর ভূতের চতুর্দশী তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন রাত হতে চলেছে। তাকে জানতে হবে, চন্দ্রিমা ডাইনিকে বাঁধনমুক্ত করে তাকে চিরতরে ভস্ম করার প্রকৃত প্রাচীন মন্ত্র কী? এই কুলুঙ্গির ফাটলই কি সেই রহস্যের চাবিকাঠি? অর্ণবকে এখন যুক্তির জগৎ ছেড়ে তন্ত্রের প্রাচীন জগতে পা রাখতে হবে।
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion