হিমশীতল পর্বত ও রহস্যময় পথিক
এরপর শুরু হলো পর্বতারোহণ। প্রথমে পাথুরে টিলা, তারপর খাড়া ঢাল, আর হিমেল বাতাস। প্রতিটি পাথর যেন শত বছরের ইতিহাস ধারণ করে আছে, তাদের গায়ে লেগে থাকা শ্যাওলা যেন প্রাচীন রহস্যের ইঙ্গিত দিচ্ছিল। আয়ানের শরীরের প্রতিটি পেশী যেন প্রতিবাদ জানাচ্ছিল, ব্যথায় টনটন করছিল তার পা। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, আর শীতের কামড় তার হাড় পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল যেন তার রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে। কিন্তু সে থেমে থাকেনি। সে জানত, প্রতিটি কষ্টের মুহূর্ত তাকে তার লক্ষ্যের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাকে শক্তিশালী করছে। এক জায়গায় সে পা পিছলে পড়তে গিয়ে প্রায় গভীর খাদে পড়ে যাচ্ছিল। নিচে ছিল কেবল গভীর অন্ধকার, আর তীক্ষ্ণ পাথরের স্তূপ। কোনোমতে একটা গাছের শিকড় ধরে সে নিজেকে বাঁচিয়েছিল, তার হাতের তালু কেটে গিয়েছিল পাথরের ঘষায়, রক্ত ঝরছিল ফসফসে পাথরের উপর। মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসে তার মনে এক অজানা শক্তি এল। সে বুঝতে পারছিল, এই পথ তার জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা, আর তাকে এই পরীক্ষায় পাস করতেই হবে, তার হারার কোনো উপায় নেই।
পাহাড়ের আরও উপরে উঠতে গিয়ে তাকে ‘কাঁটাযুক্ত পথ’ নামে পরিচিত এক অংশে প্রবেশ করতে হলো। এখানকার পাথরগুলো ছিল ধারালো, তাদের আকৃতি ছিল তীক্ষ্ণ, যেন এগুলো বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি। আর তাদের গা বেয়ে নামছিল এক ধরনের আঠালো রস, যা ত্বকে লাগলে তীব্র জ্বালা সৃষ্টি করত, মনে হচ্ছিল যেন ত্বক পুড়ে যাচ্ছে। আয়ান সাবধানে প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলছিল, কিন্তু বারবার তার হাতে-পায়ে ছোট ছোট ক্ষত তৈরি হচ্ছিল, সেগুলো থেকে রক্ত ঝরছিল অবিরাম। পাহাড়ের ওপরের দিকে আবহাওয়া আরও বৈরী হয়ে উঠল। হঠাৎ করে এক শক্তিশালী বাতাস বইতে শুরু করল, যা তাকে পিছিয়ে দিচ্ছিল, মনে হচ্ছিল বাতাস যেন তাকে নিচে ঠেলে ফেলে দিতে চাইছে। বরফ কণার একটি ছোট ঝড় শুরু হলো, যা তার চোখে-মুখে আঘাত করছিল, যেন সূঁচ দিয়ে বিঁধছে। এক মুহূর্তের জন্য তার মনে হলো সে আর পারবে না। তার শরীরটা অবসাদে ভেঙে পড়ল, মনে হচ্ছিল তার পাগুলো আর তার দেহের ভার বহন করতে পারছে না। ক্ষুধায়, তৃষ্ণায় আর ঠাণ্ডায় তার চোখে বিভ্রম দেখা দিচ্ছিল। সে যেন রিয়াকে দেখতে পাচ্ছিল, তার ম্লান মুখে হাসি ফুটে উঠেছে, তার হাতে এক বাটি গরম ভাত। কিন্তু পরক্ষণেই সে বুঝতে পারল, এটা কেবল তার মনের খেলা, এক কষ্টকর বিভ্রম। তার মাথায় তীব্র ব্যথা করছিল, মনে হচ্ছিল কেউ যেন তার মাথাটা পিষে দিচ্ছে। সে পাথরের ওপর বসে পড়ল, তার শরীরটা কাঁপছিল, ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছিল। তার জল প্রায় ফুরিয়ে গেছে, শুকনো রুটি দিয়ে পেট ভরছিল না। গ্রামের মানুষের কষ্ট, রিয়ার ম্লান মুখ – সব যেন তার সামনে মরীচিকার মতো দেখা দিচ্ছিল, তার দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছিল। সে কি ভুল করছে? এই অসাধ্য কাজ কি তার মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব? এই মুহূর্তে তার মনে হলো, ফিরে যাওয়াটাই হয়তো তার জন্য ভালো, এই কষ্ট আর সহ্য করা সম্ভব নয়। সে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল, কিন্তু তার পাগুলো যেন অসাড় হয়ে গিয়েছিল, তাতে কোনো জোর পাচ্ছিল না। তার সমস্ত শক্তি যেন নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল। ঠিক তখনই তার মনে পড়ল দাদীমার কথা: ‘বলের পথ নয়, মনের পথ’। তার ভেতরে এক অদ্ভুত জেদ তৈরি হলো। সে আবার উঠে দাঁড়াল, তার হাতে থাকা জলপাত্রটি বুকে চেপে ধরে। এই পাত্রটি তাকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল তার বিশুদ্ধ উদ্দেশ্যকে, তার আত্মত্যাগকে, আর তার হৃদয়কে। তবে, প্রতিটি পদক্ষেপে সে অনুভব করছিল যেন কেউ তাকে পাহাড়ের নিচ থেকে দেখছে, তার প্রতিটি গতিবিধি অনুসরণ করছে। বাতাস তার কানে অস্পষ্ট ফিসফিসানি এনে দিচ্ছিল, যেন অদৃশ্য কেউ তাকে পথ ভুলিয়ে দিতে চাইছে, বা তাকে এক অজানা খাদের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তার পিঠের উপর মাঝে মাঝেই এক ঠান্ডা, অদৃশ্য স্পর্শ অনুভব করছিল, মনে হচ্ছিল যেন হিমেল হাতের আঙুল তার মেরুদণ্ড বেয়ে নিচে নামছে। একসময়, সে একটি পাথরের উপর প্রাচীন রক্ত দেখতে পেল, যা তখনো তাজা মনে হচ্ছিল, যেন কিছুক্ষণ আগেই সেখানে কোনো ভয়ংকর ঘটনা ঘটে গেছে।
কয়েকদিন পর, এক অদ্ভুত জায়গায় সে পৌঁছাল। এখানকার গাছগুলোর ডালগুলো আরও অদ্ভুতভাবে বাঁকানো, যেন কোনো প্রাচীন নৃত্য করছে, তাদের উপর জমে থাকা বরফ তাদের আরও রহস্যময় করে তুলেছে। পাথরের গায়ে খোদাই করা রয়েছে অসংখ্য চিহ্ন, যা দেখলে মনে হয় এগুলো কোনো প্রাচীন ভাষার অক্ষর, বা কোনো হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার নিদর্শন। পাথরের গায়ে এমন কিছু ছবিও ছিল, যা ড্রাগনদের প্রাচীন জীবনযাত্রা নির্দেশ করছিল। আয়ান অবাক হয়ে চারদিকে তাকাল। এখানে বাতাস যেন আরও রহস্যময়, তার সাথে মিশে আছে অজানা সুগন্ধ আর পাখির ডাক, যা অন্য কোথাও শোনা যায় না, মনে হচ্ছিল যেন পৃথিবীর বাইরে কোনো জাদুকরি স্থানে সে এসেছে। এই জায়গার প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি নিঃশ্বাস যেন এক প্রাচীন ইতিহাসের ইঙ্গিত দিচ্ছিল।
ঠিক তখনই, তার সামনে এক বৃদ্ধ পথিকের আবির্ভাব হলো। বৃদ্ধের দাড়ি ছিল শুভ্র, যেন বরফে ঢাকা, তার জটা ছিল লম্বা ও ঘন, যা তার পিঠ পর্যন্ত নেমে এসেছে। তাঁর চোখ দুটি ছিল গভীর আর শান্ত, যেন সেই চোখ দুটি বহু শতাব্দীর জ্ঞান ধারণ করে আছে, আর তাতে ছিল এক অদ্ভুত দীপ্তি, যা আয়ানের আত্মাকে স্পর্শ করছিল। তাঁর পরনে ছিল জীর্ণ কিন্তু পরিষ্কার পোশাক, যা তাকে প্রকৃতির সাথে মিশে যেতে সাহায্য করছিল, মনে হচ্ছিল যেন তিনিই প্রকৃতির অংশ। তিনি মৃদু হেসে বললেন, “কোথায় চলেছো যুবক? এই দুর্গম পথে এমন একা? এ পথ তো শুধু সাহসী যোদ্ধাদের জন্য নয়, এ পথ আত্মার শক্তিতে বলীয়ানদের জন্য।” তার কণ্ঠস্বর ছিল মধু্র, তাতে যেন কোনো সুর লুকিয়ে ছিল, যা বনের পাখির কাকলির সাথে মিলে যাচ্ছিল। আয়ানের মনে হলো, এই বৃদ্ধ যেন বহু আগে থেকেই তার আগমন সম্পর্কে জানতেন। তার চোখ এমনভাবে আয়ানকে দেখছিল যেন তিনি তার সব অতীত আর ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন, তার ভেতরের সমস্ত গোপন কথা তিনি জানেন। এই জ্ঞান তাকে সাহায্য করলেও, কিছুটা অস্বস্তিকর ছিল।
আয়ান তার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করল। গ্রামের দুর্দশা, রিয়ার কষ্ট, আর তার অদম্য সংকল্পের কথা। সে তার যাত্রাপথের প্রতিটি বিপদ, প্রতিটি কষ্ট বর্ণনা করল, তার চোখে ছিল হতাশার ছাপ। বৃদ্ধ পথিক মনোযোগ দিয়ে শুনলেন, তার চোখে কোনো বিস্ময় ছিল না, বরং এক গভীর সহানুভূতি। তিনি মাঝে মাঝে আয়ানের দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছিলেন যেন তিনি তার প্রতিটি চিন্তাভাবনা পড়তে পারছেন। “বহু বছর ধরে আমি এই বনে বাস করছি,” বৃদ্ধ বললেন, তার কণ্ঠস্বর ছিল নরম কিন্তু দৃঢ়, “ড্রাগনের গুহা আমি চিনি। বহু মানুষ সেই গুহার সন্ধানে এসেছে, কিন্তু তাদের বেশিরভাগই পথভ্রষ্ট হয়েছে। কেউ কেউ লোভের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে, তাদের আত্মা এখনো এই পাথরে আটকে আছে। কেউ কেউ ভয় পেয়ে ফিরে গেছে, তাদের ছায়া এখনো এই বনে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু সেই গুহা থেকে ডিম আনা এত সহজ নয়। ড্রাগনরা লোভীদের ঘৃণা করে। তাদের শক্তি পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা করে, শুধু ব্যক্তিগত লাভের জন্য নয়। যারা ডিমের শক্তি নিজের জন্য ব্যবহার করতে চায়, তাদের কাছে ড্রাগন কেবল ভয় আর ধ্বংস নিয়ে আসে। তুমি কি জানো, ড্রাগনরা কেন পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছিল?”
আয়ান মাথা নাড়ল, “না, আমি শুধু জানি যে তারা অভিশাপ দিয়েছে।”
বৃদ্ধ পথিক হাসলেন, তার হাসি ছিল মৃদু। “অভিশাপ নয়, যুবক। সে ছিল প্রকৃতির নীরব প্রতিবাদ। মানুষ তাদের ক্ষমতাকে ভুলভাবে ব্যবহার করতে শুরু করেছিল। তারা ড্রাগনদের জ্ঞান ও শক্তিকে ব্যবহার করে নিজেরা দেবতা হতে চেয়েছিল। তারা নিজেদেরকে প্রকৃতির প্রভু মনে করতে শুরু করেছিল, ড্রাগনদের মতো শক্তিশালী হতে চেয়েছিল। যখন তারা দেখল যে মানুষের লোভের কোনো সীমা নেই, তখন ড্রাগনরা নিজেদের গুহায় ফিরে গেল, নিজেদের শক্তিকে সংরক্ষণ করার জন্য। তারা জানত, একদিন এমন একজন আসবে, যে তাদের শক্তির প্রকৃত মূল্য বুঝবে, যে তা নিঃস্বার্থভাবে ব্যবহার করবে। সেই ডিমটি কোনো সাধারণ ডিম নয়, সেটি ড্রাগনদের শেষ আশা, প্রকৃতির শেষ স্পন্দন। এটি শুধু একটি ডিম নয়, এটি প্রকৃতির আত্মা।”
“তাহলে আমি কীভাবে ডিম পাব?” আয়ান জিজ্ঞাসা করল, তার চোখে ছিল এক নতুন কৌতূহল।
বৃদ্ধ পথিক বললেন, “যখন তুমি ড্রাগনের গুহায় পৌঁছাবে, তখন তোমার সামনে দুটি পথ থাকবে। একটি বলের পথ, অন্যটি মনের। ডিমটি পাথর দিয়ে সুরক্ষিত নয়, সুরক্ষিত আছে ড্রাগনের বিশ্বাসের একটি অদৃশ্য প্রাচীর দিয়ে। এই প্রাচীর কোনো অস্ত্র দিয়ে ভাঙা যায় না, কোনো মন্ত্র দিয়ে সরানো যায় না। যে সত্যিকারের প্রয়োজন নিয়ে আসে, যে নিজের সবটুকু দিতে প্রস্তুত, যে নিজের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে চিন্তা করতে পারে, সেই কেবল সেই প্রাচীর পেরোতে পারে।” পথিক তার ঝুলি থেকে কিছু গাছের শিকড় দিলেন, যা হালকা আলোর মতো জ্বলছিল, আর তা থেকে এক স্নিগ্ধ সুগন্ধ আসছিল, মনে হচ্ছিল যেন তা কোনো প্রাচীন জাদু দ্বারা আলোকিত। শিকড়গুলো আয়ানের হাতে নিতেই তার হাতের ক্ষতগুলো যেন সামান্য দপদপ করে উঠল, মনে হলো যেন সেগুলো কোনো জীবন্ত সত্তা, যা তার রক্ত শোষণ করে নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করছে। কিন্তু সেই একই মুহূর্তে তার মন এক অদ্ভুত শান্তিতে ভরে গেল, যেন সে কোনো অদৃশ্য শক্তির সাথে যুক্ত হচ্ছে। “এই শিকড়গুলি অন্ধকারে পথ দেখাবে, আর এই ছোট জলপাত্রটি,” তিনি একটি ছোট, কাঠ খোদাই করা জলপাত্র দিলেন, যার গায়ে অদ্ভুত প্রতীক আঁকা ছিল, যা দেখে মনে হলো সেগুলো কোনো প্রাচীন অভিশাপের প্রতীক বা অজানা ক্ষমতার চিহ্ন, “তোমার মনের পবিত্রতার প্রতীক। এটি তোমার যাত্রাপথে জলের অভাব মেটাবে না, বরং তোমার আত্মাকে সতেজ রাখবে, তোমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে। মনে রেখো, ছোট জিনিসের গুরুত্ব অনেক সময় বড় জিনিসের চেয়েও বেশি হয়। প্রতিটি ক্ষুদ্র দয়া, প্রতিটি সামান্য আত্মত্যাগ, তোমার পথকে আলোকিত করবে।”
আয়ান বৃদ্ধ পথিককে ধন্যবাদ জানিয়ে আবার যাত্রা শুরু করল। পথিক অদৃশ্য হয়ে গেলেন ঠিক তেমনই যেমনভাবে তিনি এসেছিলেন, যেন তিনি বাতাসের সাথে মিশে গেলেন, তার শরীর ধুলো আর পাতার মধ্যে বিলীন হয়ে গেল, তার উপস্থিতি ছিল ক্ষণস্থায়ী কিন্তু গভীর। আয়ান পেছন ফিরে তাকাল, কিন্তু বৃদ্ধের কোনো চিহ্ন ছিল না। কেবল তার কথাগুলো বাতাসে ফিসফিস করে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল, যা আয়ানের মনে এক গভীর রহস্যের জন্ম দিল। এই বৃদ্ধ কে? তিনি কি ড্রাগনদের সাথে সম্পর্কিত? কেনই বা তিনি এই নির্জন স্থানে অপেক্ষা করছিলেন? এই প্রশ্নগুলো আয়ানকে অস্থির করে তুলল, কিন্তু তার যাত্রার সংকল্প তাকে এগিয়ে নিয়ে গেল। আয়ান বৃদ্ধের কথাগুলো বারবার মনে মনে আওড়াতে লাগল – ‘বলের পথ নয়, মনের পথ’। তার মনে পড়ল, কীভাবে সে গ্রামের এক বৃদ্ধ অন্ধ ভিক্ষুককে তার নিজের সামান্য রুটির একটি অংশ দিয়েছিল, যখন তার নিজের পেটও ক্ষিধেয় জ্বলছিল। এই ছোট ছোট কাজগুলোই কি তার আত্মাকে পবিত্র রেখেছে? সে মনে মনে ঠিক করল, সে কোনো লোভ নিয়ে ড্রাগনের গুহায় যাবে না, যাবে শুধু তার গ্রামের মানুষের জন্য, রিয়ার জন্য। এই বৃদ্ধ যেন তার জীবনের এক নতুন দিক খুলে দিলেন, এক নতুন পথের দিশা দেখালেন। আয়ান নিজেকে বোঝাতে চাইল, পথিক একজন শুভাকাঙ্ক্ষী। কিন্তু তার মন থেকে একটি সন্দেহ কিছুতেই দূর হচ্ছিল না: সেই শিকড়ের মৃদু দপদপানি এবং জলপাত্রের অদ্ভুত প্রতীকগুলো কি শুধু তার কল্পনা ছিল, নাকি তাদের মধ্যে আরও গভীর কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে? মনে হলো, পথিকের মুখটি যেন একবার বিদ্যুতের ঝলকের মতো বদলে গিয়েছিল, তার চোখে একটি ক্ষণস্থায়ী শয়তানি হাসি দেখা দিয়েছিল, কিন্তু পরক্ষণেই তা অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। আয়ান চোখ রগড়ে ভাবল, সে হয়তো ক্লান্তির কারণে ভুল দেখছে।
(চলবে)
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion