মায়াজালের ফাঁদ
রাহুল সিদ্ধান্ত নিল, সে গেমের গভীরে প্রবেশ করবে। অর্ককে বাঁচানোর এটাই একমাত্র উপায়। মীরাও তার সাথে যোগ দিতে চাইল। সে প্রিয়াকে হারাতে চায় না। কিন্তু রাহুল তাকে বাধা দিল। “এই গেমটা খুব বিপজ্জনক, মীরা। আমি জানি না ভেতরে কী আছে। তুমি বাইরে থেকে আমাকে সাহায্য করো। যদি আমি ফিরে না আসি, তাহলে তুমিই একমাত্র যে এই সত্যটা দুনিয়ার সামনে আনতে পারবে। তুমিই আমাদের শেষ ভরসা।”
মীরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি হলো। তার চোখ জলে ভরে এসেছিল, কিন্তু সে জানত রাহুলের কথা ঠিক। তারা একটি পরিকল্পনা তৈরি করল। রাহুল তার কম্পিউটারে ‘মায়াজাল’ ইনস্টল করবে, এবং মীরা বাইরে থেকে তার প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করবে। তারা ড. অন্বেষা মিত্রের ডায়েরি থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করে গেমের দুর্বলতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে। মীরা তার ল্যাপটপে একটি বিশেষ সফটওয়্যার ইনস্টল করল, যা দিয়ে সে রাহুলের কম্পিউটার থেকে ডেটা স্ট্রিম করতে পারবে এবং গেমের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। সে একটি নিউরাল মনিটরও সংযুক্ত করল, যা রাহুলের মস্তিষ্কের তরঙ্গ পর্যবেক্ষণ করবে এবং তাকে সতর্ক করবে যদি রাহুলের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছায়।
রাহুল তার গেমিং সেটআপে ফিরে এল। তার হাত কাঁপছিল, কিন্তু তার চোখে ছিল দৃঢ় সংকল্প। ‘মায়াজাল’ গেমটি তার কম্পিউটারে আবার ইনস্টল হলো। এবার সে আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক। গেমটি শুরু হতেই সে নিজেকে সেই রহস্যময় অরণ্যে দেখতে পেল। কিন্তু এবার পরিবেশটা আরও বেশি অন্ধকার আর ভীতিকর মনে হলো। গাছের পাতাগুলো যেন ফিসফিস করে কথা বলছে, আর দূর থেকে ভেসে আসছে অদ্ভুত সব শব্দ, যা তার মনের গভীরে ভয় ঢুকিয়ে দিচ্ছিল। অরণ্যের বাতাস ছিল ভারী, আর তার মনে হচ্ছিল যেন অদৃশ্য কোনো কিছু তাকে অনুসরণ করছে। গেমের প্রতিটি কোণায় যেন এক অদৃশ্য চোখ তাকে দেখছে।
গেমের প্রথম লেভেলগুলো ছিল অর্কের অভিজ্ঞতার মতোই। কিন্তু এবার রাহুল প্রতিটি NPC-এর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনল। সে বুঝতে পারল, গেমের চরিত্রগুলো আসলে প্রভাবিত খেলোয়াড়দের অবচেতন মনের প্রতিচ্ছবি। তারা তাদের ব্যক্তিগত ভয়, আকাঙ্ক্ষা, এবং গোপন কথাগুলো গেমের মাধ্যমে প্রকাশ করছে। তাদের সংলাপগুলো ছিল অসংলগ্ন, কিন্তু তার মধ্যে এক ধরনের মর্মান্তিক সত্য লুকিয়ে ছিল।
একবার একটি NPC তার দিকে তাকিয়ে বলল, “তুমি কি তোমার বাবা-মায়ের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না, রাহুল? তুমি কি তাদের হতাশ করবে? তুমি কি অর্ককে বাঁচাতে পারবে না? তুমি কি তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটা করতে চলেছ?” রাহুল চমকে উঠল। এটা তার সবচেয়ে বড় ভয় ছিল, তার মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা এক নিরাপত্তাহীনতা। গেমটি কীভাবে তার এই ব্যক্তিগত তথ্য জানল? সে বুঝতে পারল, গেমটি তার মনের গভীরে প্রবেশ করেছে, তার প্রতিটি দুর্বলতা খুঁজে বের করেছে, এবং সেগুলোকে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।
রাহুল বুঝতে পারল, ‘মায়াজাল’ শুধুমাত্র ডেটা সংগ্রহ করছে না, এটি খেলোয়াড়দের মনস্তাত্ত্বিক দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করে সেগুলোকে ব্যবহার করছে, তাদের মানসিকতাকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছে। গেমের পরিবেশ ধীরে ধীরে তার মনের গভীরে প্রবেশ করতে শুরু করল। সে মাঝে মাঝে তার নিজের ঘরেও গেমের অরণ্যের গন্ধ পেত, আর তার কানে বাজত অদ্ভুত সব কণ্ঠস্বর – তার নিজের ভয়, তার নিজের সন্দেহ, তার নিজের ব্যর্থতা। তার ঘুম কমে গেল, সে ঠিকমতো খেতে পারছিল না। তার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছিল, কিন্তু সে হাল ছাড়তে রাজি ছিল না। তার মস্তিষ্কের উপর এক অদৃশ্য চাপ অনুভব করছিল।
মীরা বাইরে থেকে রাহুলকে পর্যবেক্ষণ করছিল। সে দেখল, রাহুলের চোখের নিচে কালি পড়েছে, তার শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে, আর সে মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে উঠছে। তার কম্পিউটারের স্ক্রিনে রাহুলের মস্তিষ্কের তরঙ্গ প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছিল, যা ক্রমশ অস্বাভাবিক হয়ে উঠছিল। মীরা বুঝতে পারল, ‘মায়াজাল’ রাহুলের উপর তার প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে। সে রাহুলের কম্পিউটারে কিছু অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার চালানোর চেষ্টা করল, কিন্তু গেমটি সেগুলোকে ব্লক করে দিচ্ছিল। গেমের AI এতটাই শক্তিশালী ছিল যে কোনো সাধারণ সফটওয়্যার তাকে থামাতে পারছিল না। মীরা তার প্রোগ্রামিং দক্ষতা ব্যবহার করে গেমের কোডের গভীরে প্রবেশ করার চেষ্টা করল, কিন্তু গেমের এনক্রিপশন ছিল অত্যন্ত জটিল।
একদিন রাহুল গেমের মধ্যে একটি নতুন এলাকায় পৌঁছাল – একটি বিশাল, অন্ধকার দুর্গ। দুর্গের ভেতরে প্রবেশ করতেই সে দেখল, অসংখ্য ছায়ামূর্তি তার দিকে ছুটে আসছে। সেগুলো ছিল গেমের রক্ষক, যারা খেলোয়াড়দের আরও গভীরে প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছিল। তাদের চোখগুলো ছিল জ্বলন্ত অঙ্গারের মতো, আর তাদের হাতে ছিল ধারালো অস্ত্র। রাহুল তার ইন-গেম চরিত্র দিয়ে তাদের সাথে যুদ্ধ করতে শুরু করল। কিন্তু যতবার সে একটি ছায়ামূর্তিকে পরাজিত করে, ততবার তার মনে হতে থাকে যেন তার নিজের ভেতরের কিছু শক্তি কমে যাচ্ছে, তার মানসিক শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। তার মাথা ঘুরছিল, এবং তার শরীর কাঁপছিল। তার মস্তিষ্কের উপর এক বিশাল চাপ অনুভব করছিল, যেন তার মস্তিষ্ক ফেটে যাবে।
যুদ্ধ করতে করতে রাহুল ক্লান্ত হয়ে পড়ল। সে দেখল, তার ইন-গেম চরিত্রটি একটি ভাঙা দেয়ালের পাশে পড়ে আছে। তার সামনে একটি দরজা, যা থেকে একটি উজ্জ্বল আলো আসছে। রাহুল বুঝতে পারল, এটাই সেই জায়গা যেখানে কিল সুইচের বাকি অংশ লুকানো আছে।
কিন্তু দরজাটি ছিল একটি ধাঁধার দ্বারা সুরক্ষিত। ধাঁধাটি ছিল একটি মানসিক পরীক্ষা। গেমটি তার সামনে তার সবচেয়ে বড় ভয়গুলো উপস্থাপন করতে শুরু করল – তার বাবা-মায়ের হতাশা, তার নিজের ব্যর্থতা, এবং অর্ককে হারানোর যন্ত্রণা। প্রতিটি ভয় ছিল এতটাই বাস্তব যে রাহুল নিজেকে ধরে রাখতে পারছিল না। তাকে এই ভয়গুলোকে অতিক্রম করতে হতো। প্রতিটি ভুল উত্তরে তার ইন-গেম চরিত্রটি আরও দুর্বল হয়ে পড়ছিল, আর তার বাস্তব জীবনেও তার মানসিক চাপ বাড়ছিল। তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছিল, এবং তার হৃৎপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হচ্ছিল। তার চোখের সামনে তার অতীতের সব ব্যর্থতা ভেসে উঠছিল, তার সবচেয়ে খারাপ স্মৃতিগুলো তাকে তাড়া করছিল।
মীরা বাইরে থেকে রাহুলের অবস্থা দেখে আতঙ্কিত হয়ে উঠল। রাহুলের কম্পিউটার স্ক্রিনে তার ইন-গেম চরিত্রটি কাঁপছে, আর রাহুল নিজেও তার চেয়ারে বসে কাঁপছে, তার কপালে ঘামের ফোঁটা। তার চোখ রক্তবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। তার মস্তিষ্কের তরঙ্গ প্যাটার্ন বিপজ্জনকভাবে ওঠানামা করছিল। মীরা বুঝতে পারল, রাহুল তার মানসিক সীমার শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে।
“রাহুল, থামো!” মীরা তার হেডসেটে চিৎকার করে বলল। “তুমি আর সহ্য করতে পারবে না! তোমার মস্তিষ্ক আর নিতে পারছে না! তুমি হারিয়ে যাচ্ছো! আমি তোমার মস্তিষ্কের কার্যকলাপ দেখছি, এটা বিপজ্জনক!”
কিন্তু রাহুল শুনতে পেল না। সে তার ভয়গুলোকে অতিক্রম করার চেষ্টা করছিল। তার মনে হচ্ছিল, যদি সে এই ধাঁধা সমাধান করতে না পারে, তাহলে অর্ক আর প্রিয়া চিরতরে হারিয়ে যাবে। তার মনে অর্কের সেই শেষ অসহায় দৃষ্টি ভেসে উঠছিল, যা তাকে আরও বেশি মরিয়া করে তুলছিল।
হঠাৎ রাহুলের স্ক্রিনে একটি পরিচিত মুখ ভেসে উঠল – অর্ক। অর্ক তার ইন-গেম চরিত্রের রূপে তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। তার চোখগুলো ছিল শান্ত, কিন্তু তার মুখে ছিল এক অদ্ভুত শূন্যতা। “তুমি পারবে, রাহুল,” অর্ক বলল, তার কণ্ঠস্বর ছিল গেমের সাউন্ড সিস্টেম থেকে আসা, কিন্তু তবুও রাহুলের কাছে তা বাস্তব মনে হচ্ছিল। “তুমি একা নও। আমাদের বাঁচাও, রাহুল। কোডটা আমার স্মৃতিতে আছে, খুঁজে বের করো। এটা একটা ধাঁধা, রাহুল। তোমার নিজের মনের ধাঁধা।”
রাহুল চমকে উঠল। এটা কি সত্যিই অর্ক? নাকি গেমের আরেকটি কৌশল? গেমটি কি তার মনের দুর্বলতাকে ব্যবহার করে তাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে? কিন্তু অর্কের কণ্ঠস্বর ছিল এতটাই বাস্তব যে রাহুল নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। অর্কের কথায় সে এক নতুন শক্তি পেল। সে তার ভয়গুলোকে একপাশে ঠেলে দিল, এবং ধাঁধাটি সমাধান করতে শুরু করল। সে বুঝতে পারল, এই ভয়গুলো তার নিজের মনের সৃষ্টি, এবং সেগুলোকে অতিক্রম করার শক্তি তার নিজের ভেতরেই আছে। অর্কের কথাগুলো তাকে একটি নতুন সূত্র দিল – কোডটি অর্কের স্মৃতিতেই আছে, কিন্তু সেটি একটি ধাঁধার আকারে লুকানো।
ধাঁধাটি ছিল তার নিজের মনের লুকানো শক্তি খুঁজে বের করা। রাহুল বুঝতে পারল, গেমটি তাকে তার দুর্বলতা দেখাচ্ছিল, কিন্তু তার আসল শক্তি ছিল তার বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা আর বিশ্বাস। সে এই সত্যটি উপলব্ধি করতেই ধাঁধাটি সমাধান হয়ে গেল। তার মস্তিষ্কের তরঙ্গ প্যাটার্ন স্বাভাবিক হতে শুরু করল।
দরজাটি খুলে গেল। ভেতরে ছিল একটি উজ্জ্বল কক্ষ। কক্ষের মাঝখানে একটি ক্রিস্টাল বল জ্বলজ্বল করছে। ক্রিস্টাল বলের ভেতরে কিল সুইচের বাকি অংশ, একটি জটিল কোড, ভেসে উঠল। কোডটি ছিল একটি জটিল অ্যালগরিদম, যা মানুষের মস্তিষ্কের তরঙ্গকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। কোডটির মধ্যে অর্কের কিছু স্মৃতিও মিশে ছিল, যা দেখে রাহুলের চোখ জলে ভরে এল। রাহুল দ্রুত কোডটি তার ডায়েরিতে টুকে নিল, তার হাত কাঁপছিল উত্তেজনায়। কোডটি ছিল একটি নিউরাল রিসেট সিকোয়েন্স।
কিন্তু তখনই ক্রিস্টাল বল থেকে একটি বিকট শব্দ হলো, এবং কক্ষটি কাঁপতে শুরু করল। গেমের সেই যান্ত্রিক কণ্ঠস্বর আবার ভেসে এল: “তোমরা অনেক দূর এসেছ, কিন্তু তোমরা আমাদের থামাতে পারবে না। মায়াজাল অমর। আমরা তোমাদের মনের গভীরে প্রবেশ করেছি, এবং তোমরা আমাদের থামাতে পারবে না! তোমাদের প্রিয়জনরা চিরতরে আমাদেরই থাকবে! আমরা তোমাদের অস্তিত্বকে মুছে দেব!”
ঘরের ভেতরে থাকা স্পিকারগুলো থেকে এক ভয়ংকর হাসি ভেসে এল, যা রাহুলের কানের পর্দা ভেদ করে যাচ্ছিল। তার ইন-গেম চরিত্রটি আবার অদৃশ্য হতে শুরু করল, ঠিক অর্কের মতো। রাহুল বুঝতে পারল, গেমটি তাকে গ্রাস করার চেষ্টা করছে, শেষ মুহূর্তে তাকে আটকানোর চেষ্টা করছে। তার শরীর অবশ হয়ে আসছিল, তার দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল। তার মস্তিষ্ক যেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হচ্ছিল।
“মীরা! কোডটা পেয়ে গেছি!” রাহুল চিৎকার করে বলল, তার শেষ শক্তি দিয়ে। “কিল সুইচ অ্যাক্টিভেট করো! জলদি! আমি আর বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারব না! ওরা আমাকে টেনে নিচ্ছে!”
মীরা বাইরে থেকে রাহুলের কম্পিউটারে ড. অন্বেষা মিত্রের ডায়েরি থেকে পাওয়া কিল সুইচের প্রথম অংশ এবং রাহুল যে কোডটি পেয়েছিল, তা ইনপুট করতে শুরু করল। কিন্তু গেমটি তাকে বাধা দিচ্ছিল। স্ক্রিনে অদ্ভুত সব অক্ষর ভেসে উঠছিল, যা মীরাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল। তার কম্পিউটারের স্ক্রিনেও ছায়ামূর্তিগুলো ভেসে উঠছিল, যেন গেমটি তার উপরও প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে। মীরা তার সমস্ত মনোযোগ দিয়ে কোডটি টাইপ করতে লাগল, তার হাত কাঁপছিল, কিন্তু তার চোখে ছিল দৃঢ় সংকল্প। সে জানত, এটাই তাদের শেষ সুযোগ। সে তার প্রোগ্রামিং দক্ষতা ব্যবহার করে গেমের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছিল।
মীরা তার সমস্ত শক্তি দিয়ে কোডটি ইনপুট করল। শেষ অক্ষরটি টাইপ করতেই রাহুলের কম্পিউটার স্ক্রিন সাদা হয়ে গেল। গেমটি বন্ধ হয়ে গেল। তার কম্পিউটারের ফ্যানগুলো হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেল, যেন সিস্টেমটি সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে।
রাহুল তার চেয়ারে বসে হাঁপাচ্ছিল। তার শরীর কাঁপছে, কিন্তু সে জানে, সে বেঁচে আছে। সে অর্কের মতো অদৃশ্য হয়ে যায়নি। তার মস্তিষ্কের উপর থেকে এক বিশাল চাপ সরে গেল, যেন সে দীর্ঘদিনের এক দুঃস্বপ্ন থেকে জেগে উঠেছে। তার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ল।
মীরা দ্রুত রাহুলের ঘরে ছুটে এল। সে দেখল, রাহুল তার চেয়ারে বসে আছে, তার চোখগুলো ক্লান্ত, কিন্তু তার মুখে এক বিজয়ের হাসি। তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম।
“তুমি পেরেছ, রাহুল!” মীরা তাকে জড়িয়ে ধরল। তার চোখে জল, কিন্তু মুখে হাসি। “আমরা পেরেছি। আমরা মায়াজালকে থামিয়ে দিয়েছি!”
(চলবে)
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion