হাইব্রিড কৌশল: আল-কুতুব ও সামরিক বিজ্ঞান
ইনস্টিটিউট ছিল এখন তাদের শেষ দুর্গ। অনির্বাণ তাদের নবাবী আমলের নকশার মাধ্যমে ইনস্টিটিউটটিকে সুরক্ষিত করার সিদ্ধান্ত নিলেন:
১. অনির্বাণের প্রাচীন সঙ্কেত (Historical Cipher): অনির্বাণ ইনস্টিটিউটের প্রধান সংরক্ষণাগারের ডিজাইন মীর কাসিমের মুঙ্গের দুর্গের 'গোপন স্থিতিশীলতা কক্ষের' নকশার উপর ভিত্তি করে পরিবর্তন করলেন। এই কক্ষে ছিল শব্দ-শোষণকারী দেয়াল এবং আলোর প্রতিসরণের ওপর ভিত্তি করে তৈরি একটি চাক্ষুষ বিভ্রমের ব্যবস্থা, যা আধুনিক থার্মাল বা নাইট-ভিশন ক্যামেরাতেও ভুল তথ্য দেবে।
২. ইরার ক্রিপ্টোগ্রাফি (Temporal Encryption): ইরা নবাবের রৌপ্য-ভিত্তিক স্থিতিশীলতা ফর্মুলার এনক্রিপশন লজিক ব্যবহার করে ইনস্টিটিউটের পুরো কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত করলেন। তিনি নবাবের সীলমোহর থেকে পাওয়া ধাতব সংকর (Alloy) ব্যবহার করে একটি 'Temporal Encryption Lock' তৈরি করলেন। এই লকটি কেবল নবাবের কন্ঠস্বরের ফ্রিকোয়েন্সিতে খোলা যেত, অন্যথায় সমস্ত ডেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যেত।
৩. জামাইলের সামরিক কৌশল (Counter-Surveillance Loops): জামাইল হাসপাতাল থেকেই অলিভারের দলের গতিবিধি দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তিনি অনির্বাণ ও ইরাকে শিখিয়ে দিলেন কীভাবে অলিভারের 'ফ্লিপ-ফ্লপ টার্গেটিং' কৌশলকে কাজে লাগিয়ে তাদের উল্টো দিকে নজর ঘোরাতে হয়। জামাইলের তথ্যানুসারে, অলিভার প্রথমে ইনস্টিটিউটের নিরাপত্তা কর্মীদের দুর্বলতা খুঁজে বের করবেন এবং তারপর আঘাত করবেন।
শেষ যুদ্ধ: ইনস্টিটিউটের অবরোধ
ক্যাপ্টেন অলিভার তার দল নিয়ে ইনস্টিটিউটে হামলা চালালেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, অনির্বাণ ও ইরা সংরক্ষণাগারটিকে ফাঁকা বলে দেখানোর জন্য একটি নকল চর্মপত্র রেখে দিলেন, যা দেখতে হুবহু আসলটির মতো।
অলিভারের দল সহজেই নিরাপত্তা ভেঙে সংরক্ষণাগারে প্রবেশ করল। জয়ের হাসি হেসে অলিভার নকল চর্মপত্রটিকে ধ্বংস করার জন্য তার লেজার ডিভাইস সক্রিয় করলেন।
কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে অলিভারের দলের সমস্ত আধুনিক ওয়্যারলেস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেল। জামাইলের Delta Override Key ইরা ব্যবহার করেছেন। এটি সামরিক ফ্রিকোয়েন্সিতে সিন্ডিকেটের সমস্ত আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অকেজো করে দিল।
অলিভার হতবাক। "এ কী হলো?"
অনির্বাণ এবং ইরা একটি গোপন মনিটরে অলিভারকে দেখলেন। অনির্বাণ বললেন, "আমরা আপনাকে জানাই, ক্যাপ্টেন। এটি নবাব মীর কাসিমের সেই 'শেষ চাল'। আমরা এখন আপনার সামরিক কৌশল, আমাদের প্রযুক্তি এবং ইতিহাস—সবকিছু ব্যবহার করছি।"
অলিভারের দল যখন নকল চর্মপত্রটি ধ্বংস করে নিজেদের বিজয়ী ভাবছিল, তখন তারা বুঝতে পারল—তারা ফাঁদে পড়েছে। তাদের চারপাশে থাকা দেয়ালগুলো ছিল শব্দ-শোষণকারী, যা তাদের নিজস্ব কথোপকথন ও নির্দেশের প্রতিফলন ঘটাচ্ছিল।
অলিভারের দলটি বিভ্রান্ত হয়ে একে অপরের ওপর আক্রমণ শুরু করল। অলিভার যখন বুঝতে পারলেন, তাদের দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে, তখন তিনি নিজে আসল চর্মপত্রের সন্ধানে অনির্বাণ ও ইরার গোপন আস্তানার দিকে ছুটলেন।
অলিভার অনির্বাণকে ধরে ফেললেন। "তোমার হাতে এখন আর কিছু নেই, ডক্টর রায়। নবাবের দলিল ধ্বংস হবে।"
"হতে পারে," অনির্বাণ শান্তভাবে বললেন। "কিন্তু সত্য ধ্বংস হবে না।"
ইরা এই সময়ে আল-কুতুবের কৌটা ব্যবহার করে অলিভারের এনক্রিপ্টেড সামরিক হেডসেটে নবাব মীর কাসিমের কন্ঠস্বর বাজিয়ে দিলেন। নবাবের কন্ঠস্বর ঘোষণা করল, "বিশ্বাসঘাতকতার রক্ত কখনও রং পাল্টায় না।"
অলিভারের সামরিক দৃঢ়তা এক মুহূর্তের জন্য ভেঙে গেল। তার চোখে সন্দেহ। সেই সুযোগে অনির্বাণ অলিভারকে পরাস্ত করে ইনস্টিটিউটের বাইরে অপেক্ষারত পুলিশ এবং আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দিলেন।
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion