Episode 41587 words0 views

নিথর পদচিহ্ন : পর্ব ৪

নিথর পদচিহ্ন (Frozen Footprints) পর্ব ৪: অদৃশ্য ফাঁদ “কুইক! বাড়িটা ভালো করে সার্চ করো! খুনী আশেপাশেই আছে!” রিমার চিৎকারটা যেন পুরনো বাড়ির নিস্তব্ধতাকে মুহূর্তেই ছিঁড়ে দিল, কিন্তু সেই তীক্ষ্ণ শব্দও যেন বাতাসেই মিলিয়ে গেল, কোনো প্রতিধ্বনি ছাড়াই, যা এক ধরণের অদ্ভুত নীরবতা তৈরি করল। অভ্রজিৎ এবং বাকি টিম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল, প্রতিটি পদক্ষেপে তাদের বুটের শব্দ যেন এই নির্জনতার উপর এক অপ্রত্যাশিত আঘাত। প্রতিটি কক্ষ, প্রতিটি কোণ, এমনকি ছাদ আর বাগানও তন্ন তন্ন করে খোঁজা হলো, যেন প্রতিটি ইট-পাথরের ভেতরে লুকিয়ে আছে এক অদৃশ্য বিভীষিকা, যা তাদের দিকেই তাকিয়ে হাসছে। কিন্তু লাভ হলো না। খুনী যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে, এক অশরীরী ছায়ার মতো, তার অস্তিত্বের একমাত্র প্রমাণ ছিল তার রেখে যাওয়া বীভৎসতার স্বাক্ষর আর সেই ডায়েরিটি। রিমার মনে হলো, তারা যেন খুনীর পাতা এক অদৃশ্য ফাঁদে পা দিয়েছে, এক গোলকধাঁধায় আটকে পড়েছে যেখানে প্রতিটি প্রস্থানই একটি প্রবেশপথ, প্রতিটি কোণায় লুকিয়ে আছে নতুন আতঙ্ক। সে তাদের আসতে দেখেছে, প্রস্তুতি নিয়েছে, এবং তাদের নাকের ডগা দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেছে, যেন একটি চতুর শিকারী তার শিকারকে নিয়ে খেলছে, তাদের প্রতিটি দুর্বলতা সে জানে। প্রতিটি নিঃশ্বাস যেন ভারী লাগছিল রিমার, তার বুকের ভেতর এক অজানা আতঙ্ক পাক খাচ্ছিল, যা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছিল। খুনী শুধু তাদের অনুসরণই করছিল না, সে যেন তাদের চিন্তাগুলোকেও পড়ে ফেলছিল, তাদের প্রতিটি পদক্ষেপের ভবিষ্যদ্বাণী করছিল, তাদের প্রতিটি ভুল তাকে আরও আনন্দ দিচ্ছিল, প্রতিটি ব্যর্থতা তাকে আরও শক্তিশালী করে তুলছিল। “ম্যাডাম, আশেপাশে আর কেউ নেই,” অভ্রজিৎ ফিরে এসে জানাল, তার মুখে স্পষ্ট হতাশা, যেন এই ব্যর্থতা তার সমস্ত শক্তি শুষে নিয়েছে। “বাড়িটা পুরো ফাঁকা। এটা কি কেবল একটা ফাঁদ ছিল? নাকি সে জানত আমরা আসছি?” রিমা নিচু হয়ে সেই ডায়েরিটা আবার হাতে নিল। শেষ পাতায় লেখা সেই লাইনটা – “আপনার আগমন, আমার শিল্পকর্মের নতুন দর্শক। খেলা শুরু হলো।” এই লাইনগুলো যেন খুনীর ঠান্ডা, বীভৎস হাসির প্রতিধ্বনি করছিল তার কানে, প্রতিটি অক্ষর যেন তার স্নায়ুতে কাঁটা দিচ্ছিল, প্রতিটি শব্দ যেন তার মস্তিস্কের গভীরে প্রবেশ করছিল। খুনী তাদের সাথে খেলছে, আর এই খেলাটা কেবল শুরু হয়েছে। এই ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা, এই আত্মবিশ্বাস – খুনী কোনো সাধারণ অপরাধী নয়। সে অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং মনোবিকারগ্রস্ত, যার একমাত্র লক্ষ্য হলো রিমার মনের গভীরে প্রবেশ করা, তাকে ধীরে ধীরে ভেঙে দেওয়া। ডায়েরিটা ফরেনসিকের কাছে পাঠানোর আগে রিমা নিজেই তার প্রতিটি পাতা খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করল, যেন প্রতিটি অক্ষরের মধ্যে খুনীর মনের গোপন কন্দরের পথ খুঁজে বের করতে চাইছে, তার প্রতিটি লুকানো উদ্দেশ্য বোঝার চেষ্টা করছিল। একটি পাতার ভাঁজে সে একটা ছোট, অদ্ভুত নকশার খোদাই করা ধাতব পাত আবিষ্কার করল, যা আগে খেয়াল করেনি। এটি দেখতে একটি ক্যাকটাসের কাঁটার মতো, কিন্তু তার ভেতরের অংশে এক ধরণের সাংকেতিক চিহ্ন খোদাই করা। আর তার নিচে খুব ছোট অক্ষরে লেখা: “আপনার জন্য, ইন্সপেক্টর। পরের পর্বের জন্য প্রস্তুত হন।” এই বার্তাটি যেন কাগজের পাতা ভেদ করে রিমার হৃদপিণ্ডে বিঁধে গেল, তার অস্তিত্বের গভীরে কাঁপন ধরিয়ে দিল। রিমার শরীর হিম হয়ে গেল। এই বার্তাটা শুধু তাকে উদ্দেশ্য করে লেখা, যেন খুনী আর তার মধ্যে এক ভয়ঙ্কর ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে, যা রিমা চায়নি। খুনী তাকে ব্যক্তিগতভাবে টার্গেট করছে। তার নাম, তার পদবী উল্লেখ না করলেও, এটা স্পষ্ট যে খুনী রিমার উপর বিশেষভাবে নজর রাখছে, তার প্রতিটি পদক্ষেপ, তার প্রতিটি দুর্বলতা সে জানে, তার সবচেয়ে গোপন ভয়গুলোও হয়তো সে জানে। এটা কি কোনো প্রতিশোধের খেলা, নাকি খুনীর এক ধরণের বিকৃত আকর্ষণ, রিমার মনের গভীরে প্রবেশ করে তাকে নিয়ন্ত্রণের এক জঘন্য চেষ্টা? এই ধরণের ব্যক্তিগত বার্তা রিমার জীবনে প্রথম। তার মনে হলো, খুনী যেন তার আত্মার গভীরে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে, তার দুর্বলতাগুলোকে উন্মোচন করতে চাইছে, এবং তার মানসিক প্রাচীর ভেঙে তাকে এক উন্মুক্ত শিকারের মতো দেখতে চাইছে। অভ্রজিৎও বার্তাটা দেখল, তার চোখে বিস্ময় আর এক ধরণের আতঙ্ক। “ম্যাডাম, সে আপনাকে ফলো করছে? সে আপনার সম্পর্কে সবকিছু জানে? আপনার ব্যক্তিগত তথ্য?” “মনে হচ্ছে তাই,” রিমা চাপা গলায় বলল, তার কণ্ঠস্বর যেন নিজের কাছেই অচেনা লাগছিল, যেন অন্য কেউ তার মুখ দিয়ে কথা বলছে। তার ভেতরে এক ধরণের ক্রোধ আর আতঙ্ক মিশে যাচ্ছিল, যা তাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করছিল, এক ভয়ংকর বিষের মতো সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছিল। খুনীর এই ব্যক্তিগত আক্রমণ রিমার মানসিক ভারসাম্যকে আরও নড়বড়ে করে তুলল। রাতে তার ঘুম একদমই আসত না। বিছানায় শুয়ে সে কেবল ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকত, প্রতিটি ফিসফাস শব্দে তার মনে হতো খুনী বুঝি তার দরজার ওপাশেই দাঁড়িয়ে আছে, তার নিঃশ্বাস তার ঘাড়ের কাছে অনুভব করছিল। যখনই চোখ বন্ধ করত, সায়নী, অনামিকা, রুমা সেনের বিকৃত মুখগুলো, তাদের শূন্য দৃষ্টি, এবং এখন খুনীর সেই বিদ্রূপাত্মক হাসি তার চোখের সামনে ভেসে উঠত, যেন তারা সবাই মিলে তাকে এক অদেখা গহ্বরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, এক অন্তহীন পতন। তার পুরনো ক্ষতগুলো দগদগে হয়ে উঠছিল, প্রতিটি নিঃশ্বাসে যেন সেই পুরোনো ব্যথা ফিরে আসছিল, তার শরীর আর মনকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছিল। অতীতের সেই অসহায় মুহূর্তগুলো, যখন সে নিজেও শিকার হয়েছিল, বারবার ফিরে আসছিল তার স্মৃতিতে, যেন এক দুঃস্বপ্ন তাকে বারবার তাড়া করছিল, প্রতি রাতে নতুন করে জীবন্ত হয়ে উঠছিল। সে অনুভব করছিল, এই খুনী যেন তার ভেতরের ভয়কে ব্যবহার করে তাকে ভেঙে দিতে চাইছে, তাকে এক জীবন্ত নরকে পরিণত করতে চাইছে, তাকে এক মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে ঠেলে দিচ্ছে যেখানে জয় পাওয়া অসম্ভব। রিমা সারাদিন ধরে ক্যাফিন আর সিগারেটের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ল। তার চেহারায় ক্লান্তি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল, তার চোখগুলো যেন গভীর কালো গর্তে পরিণত হয়েছে, কিন্তু তার চোখে এক ধরণের জেদ, এক উন্মাদনা, যা তাকে অন্ধ করে দিচ্ছিল। অভ্রজিৎ কয়েকবার রিমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করল, তাকে বিশ্রাম নিতে বলল, তাকে বাড়ি যেতে অনুরোধ করল, কিন্তু রিমা তার কথায় কান দিল না। তার একটাই লক্ষ্য, খুনীকে ধরা, যেন সেটাই তার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, এক বাধ্যতামূলক মিশন। তার ব্যক্তিগত জীবন আর পেশাগত জীবনের সীমানা যেন ক্রমশ ধূসর হয়ে যাচ্ছিল, সব কিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছিল, যেন সে তার নিজের সত্তাকে হারাতে বসেছিল। এই কেসটা এখন তার জন্য কেবল একটা অপরাধ নয়, বরং নিজের অস্তিত্বের লড়াই, নিজেকে হারানোর বিরুদ্ধে এক মরিয়া সংগ্রাম, এক চূড়ান্ত পরীক্ষা। খুনীর এই নতুন বার্তা আর পুরনো ডায়েরির খবর গণমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গেল, যা শহরের আতঙ্ককে আরও বাড়িয়ে দিল, যেন একটি অদৃশ্য আগুনের শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। সংবাদপত্রগুলো এই ঘটনাকে ‘সিরিয়াল কিলারের উন্মাদনা’ হিসেবে পরিবেশন করল, প্রতিটি সংবাদ যেন নতুন করে ভয় ছড়িয়ে দিচ্ছিল, মানুষকে আরও বেশি শঙ্কিত করে তুলছিল। শহরের প্রতিটি কোণায় ভয় আর আতঙ্ক গ্রাস করল। সন্ধ্যা নামতেই রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ত, যেন ভূতুড়ে শহরে পরিণত হতো। মানুষ পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিল, নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে রাজপথে বিক্ষোভ শুরু হলো, স্লোগানে মুখরিত হতে লাগল শহর, প্রতিটি স্লোগান যেন রিমার কানে বিদ্রূপের মতো বাজছিল। ডিআইজি রিমার উপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করলেন। “আমরা জনরোষ সামলাতে পারছি না, রিমা। দ্রুত কিছু একটা চাই। এই কেসটা এখন আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন, পুরো পুলিশ বিভাগের সম্মান ঝুঁকির মুখে, তোমার সম্মানও।” রিমা বুঝতে পারছিল, সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে, প্রতিটি টিক-টিক শব্দ যেন তার মাথার ভেতরে বোমা ফাটাচ্ছিল, আর সে অনুভব করছিল যে বিস্ফোরণ আসন্ন। এই চাপ তাকে আরও বেশি হতাশ করে তুলছিল, কিন্তু তার জেদ আরও বাড়ছিল, যেন হতাশা তাকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তুলছিল, এক অদম্য শক্তি। খুনীর প্রতিটি পদক্ষেপ যেন তাকে আরও বেশি করে খেলার ভেতরে টানছিল, এক অদৃশ্য টান যা তাকে এই অন্ধকার পথে আরও গভীরে নিয়ে যাচ্ছিল, এক এমন অন্ধকার যেখানে আলো প্রবেশের কোনো পথ ছিল না। একদিন রাতে, রিমা যখন তার অফিসে একা বসে ডায়েরিটা নিয়ে ভাবছিল, তার চারপাশে কেবল ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দ আর নিজেরই নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছিল, যা ক্রমশ ভারী হয়ে উঠছিল, হঠাৎ তার ব্যক্তিগত ফোনটা বেজে উঠল। আননোন নাম্বার। রিমার বুকটা ধক করে উঠল, তার পুরো শরীর যেন বিদ্যুতের শক খেলো। সে জানত এটা কে। রিমা দ্বিধা নিয়ে ফোনটা ধরল, তার হাত কাঁপছিল। ওপাশ থেকে এক গভীর, ঠান্ডা, বিদ্রূপাত্মক কণ্ঠস্বর ভেসে এল, যা রিমার মেরুদণ্ড দিয়ে এক হিমশীতল অনুভূতি বয়ে নিয়ে গেল, যেন সে এক মৃত মানুষের আত্মার সাথে কথা বলছে। “ইন্সপেক্টর রিমা সেনগুপ্ত, আপনি কেমন আছেন? আমার শিল্পকর্মের নতুন দর্শক?” কণ্ঠস্বরে যেন এক ধরণের আনন্দ আর বিজয় মিশ্রিত ছিল, যা রিমার কানে পিশাচের হাসির মতো লাগছিল। রিমার হাত থেকে ফোনটা প্রায় পড়ে যাচ্ছিল। এটা খুনীর কণ্ঠস্বর। “কে বলছেন? কী চাও তুমি?” তার গলায় স্পষ্ট উত্তেজনা, কিন্তু সে চেষ্টা করছিল নিজের ভয়কে দমন করতে, তার কণ্ঠস্বর যেন কাঁপছিল। “আপনার শিল্পকর্মের নতুন দর্শক,” কণ্ঠস্বরটি শান্তভাবে বলল, প্রতিটি শব্দ যেন মেপে মেপে উচ্চারণ করছিল, প্রতিটি শব্দ যেন রিমার কানের ভেতরে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল, “আপনি ডায়েরিটি দেখেছেন, তাই না? আমার শেষ বার্তাটিও? কেমন লাগছে খেলাটা? আপনি কি প্রস্তুত আমার সাথে এই খেলায় অংশ নিতে, ইন্সপেক্টর? কারণ এই খেলা এখন আরও ব্যক্তিগত হয়েছে।” রিমার শ্বাস আটকে গেল। খুনী তাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করছে, তার দুর্বলতম মুহূর্তে তাকে আঘাত করছে, তার ব্যক্তিগত জীবনকে তার পেশার সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে। “তুমি কে? কেন করছ এসব? কেন আমাকে টার্গেট করছ?” রিমার গলা থেকে যেন কোনোমতে শব্দ বের হলো, তার শরীর কাঁপছিল। “আমি একজন শিল্পী। আর আপনি আমার আর্ট সমালোচক,” কণ্ঠস্বরটি হাসল, সেই হাসিটা ফোনের তার বেয়ে রিমার কানে এসে বিঁধল, যেন খুনী তার সামনে দাঁড়িয়ে তাকে দেখে হাসছে। “আমি চাই আপনি আমার শিল্পকর্মের প্রশংসা করুন, এবং এরপর আমাকে খুঁজে বের করুন। আমি আপনার জন্যই অপেক্ষা করছি, ইন্সপেক্টর। কিন্তু মনে রাখবেন, খেলাটা আমি শুরু করেছি, আর আমিই শেষ করব। আপনি আমার সাথে পাল্লা দিতে পারবেন না, কারণ এই খেলার নিয়ম আমিই তৈরি করি, আর আপনি কেবল একজন খেলোয়াড়।” কথাটা শেষ হওয়ার আগেই ফোন কেটে গেল। রিমার হাত কাঁপছিল, তার শরীর ঘামে ভিজে যাচ্ছিল, তার মাথা ঘুরছিল। খুনী শুধু তার অবস্থানই জানত না, তার ব্যক্তিগত নম্বরও জানত, এবং তাকে ব্যক্তিগতভাবে টার্গেট করছিল। এটা কোনো সাধারণ অপরাধী নয়। সে রিমার প্রতিটি পদক্ষেপ নজরে রাখছে, তার প্রতিটি শ্বাসপ্রশ্বাস হয়তো সে শুনতে পাচ্ছিল, এমনকি তার প্রতিটি চিন্তাও যেন সে পড়ে ফেলছিল। তার মনে হলো, সে যেন এক অদৃশ্য জালিকাটা ঘরে বন্দি, আর খুনী সেই জালের বাইরে দাঁড়িয়ে তাকে হাসছে, তার পতন দেখে আনন্দ পাচ্ছে, প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছে। এই ঘটনা রিমার ভেতরের আগুনকে আরও তীব্র করে তুলল, এবং সে বুঝতে পারল, এই কেসটা এখন কেবল তাকে ব্যক্তিগতভাবে ধরার জন্য নয়, বরং তার আত্মসম্মান আর টিকে থাকার লড়াই। সে নিজেকে প্রতিজ্ঞা করল, এই খেলা সে শেষ করবে, এবং খুনীকে নিজের হাতে শাস্তি দেবে, যদি শেষ পর্যন্ত সে নিজেই শিকার না হয়ে যায়, এই অদৃশ্য ফাঁদে আটকা পড়ে। ক্রমশ….

Share this story

Comments

Discussion

No comments

Please sign in to join the discussion