প্যাটার্নের সন্ধান
রাহুল বর্মার নিখোঁজ হওয়ার খবরটা দার্জিলিংয়ে যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিল। প্রিয়াঙ্কার ঘটনায় যে চাপা আতঙ্ক ছিল, তা এখন প্রকাশ্য ভয়ে পরিণত হয়েছে। শহরের ধনী এবং প্রভাবশালী পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজগুলোতে অভিভাবকরা ভিড় জমাচ্ছেন, ছেলেমেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সংবাদমাধ্যমগুলো এই দুটি অপহরণকে “সিরিয়াল কিডন্যাপিং” হিসেবে আখ্যায়িত করে খবর প্রচার করছে, যা পুলিশের উপর চাপ আরও বাড়িয়ে তুলছে। কলকাতা পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল থেকেও প্রতিনিয়ত ফোন আসছিল। অরুণিমার উপর চাপ বাড়ছিল, কিন্তু তিনি জানতেন, এই ধরনের পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখা সবচেয়ে জরুরি।
থানায় ফিরে অরুণিমা তার ডেস্কে বসলেন, তার সামনে দুটি কেস ফাইল। প্রিয়াঙ্কা মুখার্জী এবং রাহুল বর্মা। তিনি দুটি ফাইল পাশাপাশি রেখে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলেন, যেন প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি তারিখ, প্রতিটি ছবির মধ্যে কোনো লুকানো সূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। সুব্রত রায় তার পাশে এসে দাঁড়ালেন, তার মুখেও গভীর চিন্তার ছাপ। তার চোখেও ছিল এক ধরণের ক্লান্তি, গত কয়েক দিন ধরে তারা প্রায় নির্ঘুম কাটাচ্ছিলেন।
“ম্যাডাম, রাহুলের বন্ধুদের সাথে কথা হয়েছে,” সুব্রত রায় বললেন। “রিনা জানিয়েছে, রাহুল রেস্তোরাঁ থেকে রাত সাড়ে ন’টায় বেরিয়েছিল। সে একা ছিল। রিনা ওকে গাড়িতে লিফট দিতে চেয়েছিল, কিন্তু রাহুল বলেছিল সে হেঁটে যাবে, কারণ আবহাওয়া ভালো ছিল। রিনা আরও জানিয়েছে যে, রাহুল ইদানিং একটু অন্যমনস্ক থাকত, যেন কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত ছিল।”
“হেঁটে যাবে?” অরুণিমা ভ্রু কুঁচকালেন। “রাহুলের বাড়ি থেকে রেস্তোরাঁ কতটা দূরে?”
“প্রায় দুই কিলোমিটার, ম্যাডাম। হাঁটার দূরত্ব। কিন্তু রাত সাড়ে ন’টায় একা হেঁটে যাওয়াটা একটু অস্বাভাবিক, বিশেষ করে যখন শহরজুড়ে প্রিয়াঙ্কার নিখোঁজ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। রিনা বলেছে, রাহুল নাকি বলেছিল তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে, তাই সে একাই ফিরতে চায়।”
“ঠিক ধরেছেন, ইন্সপেক্টর। এটাই অস্বাভাবিকতা,” অরুণিমা বললেন। “প্রিয়াঙ্কাও পার্টি থেকে একা বেরিয়েছিল। তার বন্ধুদের বক্তব্য অনুযায়ী, সেও কাউকে কিছু বলেনি কখন বা কিভাবে চলে গেছে। দুটো ক্ষেত্রেই নিখোঁজ হওয়ার সময়টা রাতের বেলা, এবং তারা একা ছিল.”
অরুণিমা তার নোটবুকে দুটি ঘটনার মিলগুলো আরও বিশদভাবে লিখতে শুরু করলেন:
১. অপহৃতরা প্রভাবশালী ও ধনী পরিবারের সন্তান। তাদের পারিবারিক প্রতিপত্তি এবং সামাজিক অবস্থান প্রায় একই স্তরের।
২. বয়স কাছাকাছি (১৭-১৯ বছর), অর্থাৎ তরুণ-তরুণী।
৩. কোনো মুক্তিপণ চাওয়া হয়নি – এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা সাধারণ অপহরণ থেকে এই ঘটনাকে আলাদা করছে।
৪. কোনো জোর করে ঢোকার চিহ্ন নেই, যা ইঙ্গিত দেয় যে অপহরণকারীরা হয়তো পরিচিত ছিল অথবা অপহৃতদের বিশ্বাস অর্জন করেছিল।
৫. উভয় ক্ষেত্রেই মোবাইল ফোন গায়েব – এটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার একটি স্পষ্ট চেষ্টা, এবং এতে অপহৃতদের ব্যক্তিগত তথ্যও থাকতে পারে।
৬. উভয় স্থানেই একই ধরনের ক্ষুদ্র ধাতব কণা পাওয়া গেছে – এটি অপরাধীর একটি সম্ভাব্য ‘ট্রেডমার্ক’ বা তার ব্যবহৃত কোনো যন্ত্রাংশের অংশ হতে পারে। ল্যাবের রিপোর্ট এলে এর গুরুত্ব আরও বাড়বে।
৭. উভয়ই রাতের বেলায় নিখোঁজ হয়েছে, এবং তারা একা ছিল – এটি অপরাধীর শিকার নির্বাচনের একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
“এই ধাতব কণাটার রিপোর্ট কি এসেছে, ইন্সপেক্টর?” অরুণিমা জিজ্ঞেস করলেন। তার চোখ ডেস্কের উপর রাখা জিপলক ব্যাগের দিকে।
“না ম্যাডাম, এখনও আসেনি। ল্যাব জানিয়েছে, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, কিন্তু এই ধরনের ক্ষুদ্র কণার বিশ্লেষণ সময়সাপেক্ষ। তবে তারা নিশ্চিত করেছে যে কণাটি কোনো সাধারণ ধাতু নয়, বরং একটি বিশেষ সংকর ধাতু।” সুব্রত রায় বললেন।
অরুণিমা কিছুক্ষণ ভাবলেন। “ইন্সপেক্টর, এই দুটি পরিবারের মধ্যে কি কোনো গভীর সংযোগ আছে? ব্যবসা, সামাজিক সম্পর্ক, বা পুরনো কোনো বিবাদ? শুধু সাধারণ পরিচিতি নয়, এমন কিছু যা তাদের এই অপহরণের লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে।”
সুব্রত রায় মাথা নাড়লেন। “প্রাথমিকভাবে তেমন কোনো সংযোগ খুঁজে পাইনি, ম্যাডাম। মুখার্জী সাহেব চা ব্যবসার সাথে জড়িত, আর মি. বর্মা রিয়েল এস্টেট এবং হোটেল ব্যবসার সাথে। তাদের মধ্যে সরাসরি কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। সামাজিক অনুষ্ঠানে হয়তো দেখা হয়, কিন্তু ঘনিষ্ঠতা নেই.”
“তাহলে শিকার নির্বাচনের পেছনে কারণ কী?” অরুণিমা বিড়বিড় করলেন। “যদি ব্যক্তিগত শত্রুতা না হয়, তাহলে কি এটা নিছকই ক্ষমতা বা প্রতিপত্তি দেখানোর জন্য? নাকি এর পেছনে কোনো প্রতীকী অর্থ আছে? অপরাধী কি সমাজের এই উচ্চবিত্ত শ্রেণির প্রতি কোনো বার্তা দিতে চাইছে?” তার মনে হচ্ছিল, এই অপরাধী শুধু শারীরিক অপহরণ করছে না, সে যেন এক মানসিক খেলা খেলছে।
তার মনে হলো, এই কেসের জন্য একজন মনোবিজ্ঞানীর সাহায্য প্রয়োজন। একজন অপরাধীর মনস্তত্ত্ব বোঝা এই ধরনের কেসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সুব্রত রায়কে জিজ্ঞেস করলেন, “ইন্সপেক্টর, দার্জিলিংয়ে কি কোনো অভিজ্ঞ মনোবিজ্ঞানী আছেন, যিনি অপরাধ মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা রাখেন? এমন কেউ যিনি মানুষের মনের গভীরতা বুঝতে পারেন?”
সুব্রত রায় কিছুক্ষণ ভাবলেন। “একজন আছেন, ম্যাডাম। ড. প্রবীর মিত্র। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। বছর দশেক আগে অবসর নিয়ে দার্জিলিংয়ে চলে এসেছেন। তিনি বেশ জ্ঞানী মানুষ, তবে একটু নির্জনতা পছন্দ করেন। শহরের খুব কম মানুষই তার সাথে যোগাযোগ রাখে।”
“তার ঠিকানা দিন, ইন্সপেক্টর। আমি তার সাথে দেখা করতে চাই,” অরুণিমা বললেন। তার মনে হলো, এই ড. মিত্রই হয়তো এই রহস্যের জট খুলতে সাহায্য করতে পারবেন। তার অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
বিকেলের দিকে অরুণিমা একাই ড. প্রবীর মিত্রের বাড়ির দিকে রওনা হলেন। শহরের কোলাহল ধীরে ধীরে পেছনে ফেলে তিনি এগিয়ে চললেন পাইন বনের গভীরে। রাস্তা যত নির্জন হচ্ছিল, তত যেন পাহাড়ের নীরবতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। কুয়াশার হালকা চাদর গাছপালাগুলোকে এক রহস্যময় আবরণে ঢেকে রেখেছিল। পুরনো দিনের একটি বিশাল বাড়ি, যার চারপাশে একটি সুন্দর বাগান। বাড়িটি যেন সময়ের সাথে থমকে গিয়েছিল, এক ধরণের প্রাচীন আভিজাত্য নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। বাড়ির গেটে কোনো নামফলক ছিল না, শুধু একটি ছোট কাঠের ফলকে লেখা ছিল ‘শান্তিনিকেতন’। এই নামেই যেন বাড়ির মালিকের মানসিকতা ফুটে উঠছিল।
অরুণিমা গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলেন। বাগানটি বেশ যত্ন করে সাজানো, বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ফুটে আছে, যদিও শীতের কারণে তাদের ঔজ্জ্বল্য কিছুটা ম্লান। কিছুক্ষণ হাঁটার পর তিনি মূল দরজার সামনে পৌঁছালেন এবং কলিং বেল বাজালেন।
কিছুক্ষণ পর একজন বয়স্ক ভদ্রলোক দরজা খুললেন। তার পরনে ছিল একটি ঢিলেঢালা উলের সোয়েটার এবং পাজামা। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, যা তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিচ্ছিল। তার মুখে এক ধরণের শান্ত ভাব ছিল, কিন্তু চোখ দুটি ছিল তীক্ষ্ণ এবং বুদ্ধিদীপ্ত, যেন ভেতরের গভীর চিন্তাভাবনা বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছিল। তার সাদা চুল এবং দাড়ি তাকে এক ঋষিতুল্য চেহারা দিয়েছিল।
“আমি ডিটেক্টিভ অরুণিমা সেনগুপ্ত, দার্জিলিং সদর থানা থেকে এসেছি,” অরুণিমা নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। “আপনি কি ড. প্রবীর মিত্র?”
ভদ্রলোক মৃদু হাসলেন। “হ্যাঁ, আমিই প্রবীর মিত্র। আসুন, ভেতরে আসুন।” তার কণ্ঠস্বরে এক ধরণের উষ্ণতা ছিল, যা এই হিমেল সন্ধ্যায় অরুণিমাকে কিছুটা স্বস্তি দিল।
অরুণিমা ভেতরে ঢুকলেন। লিভিং রুমটা বইপত্রে ভরা ছিল। মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত সারি সারি বইয়ের আলমারি, বিভিন্ন ভাষার, বিভিন্ন বিষয়ের বই। ঘরের মাঝখানে একটি ফায়ারপ্লেস, যেখানে আগুন জ্বলছিল, তার উষ্ণতা সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ছিল। ঘরের কোণে একটি আরামকেদারা, তার পাশে একটি ছোট টেবিল, তাতে কিছু বই এবং একটি চায়ের কাপ। ঘরের প্রতিটি কোণে যেন জ্ঞান আর শান্তির এক অদ্ভুত মিশেল।
“বসুন, ডিটেক্টিভ সেনগুপ্ত,” ড. মিত্র বললেন, একটি আরামকেদারার দিকে ইঙ্গিত করে। “কী ব্যাপার? পুলিশ হঠাৎ আমার এই নির্জন আশ্রয়ে কেন এসেছে?”
অরুণিমা সংক্ষেপে প্রিয়াঙ্কা এবং রাহুলের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাগুলো ব্যাখ্যা করলেন। তিনি দুটি ঘটনার মধ্যেকার মিলগুলো তুলে ধরলেন, বিশেষ করে মুক্তিপণ না চাওয়া, মোবাইল ফোন গায়েব হওয়া, এবং সেই রহস্যময় ধাতব কণাটির কথা বললেন। তিনি তার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন যে, এটি একটি সিরিয়াল অপহরণের ঘটনা হতে পারে এবং এর পেছনে একটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক কারণ থাকতে পারে।
ড. মিত্র মনোযোগ দিয়ে শুনলেন, তার মুখে কোনো ভাবান্তর ছিল না, কিন্তু তার চোখ দুটি অরুণিমার প্রতিটি শব্দ বিশ্লেষণ করছিল। অরুণিমার কথা শেষ হলে তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন, যেন তার মনের গভীরে তথ্যগুলো প্রক্রিয়া করছিলেন।
“আপনি কি মনে করেন, এর পেছনে কোনো বিশেষ মনস্তত্ত্ব কাজ করছে, ডাক্তার সাহেব?” অরুণিমা জিজ্ঞেস করলেন। “কেন একজন অপরাধী মুক্তিপণ না চেয়ে শুধু প্রভাবশালী পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করবে?”
ড. মিত্র তার চশমাটা ঠিক করে বললেন, “মুক্তিপণ না চাওয়া, কোনো ক্লু না রাখা, এবং প্রভাবশালী পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করা… এটা সত্যিই অস্বাভাবিক। এটি আর্থিক লাভের জন্য করা অপরাধ নয়। এর পেছনে প্রতিশোধের উদ্দেশ্য থাকতে পারে, অথবা কোনো গভীর মানসিক বিকার। অপরাধী হয়তো সমাজের প্রতি ক্ষুব্ধ, বিশেষ করে এই উচ্চবিত্ত শ্রেণির প্রতি তার গভীর ঘৃণা রয়েছে। সে হয়তো তাদের কোনো অন্যায়ের জন্য শাস্তি দিতে চাইছে, যা সমাজের চোখে হয়তো অন্যায় নয়, কিন্তু তার ব্যক্তিগত জীবনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে।”
তিনি আরও বললেন, “এই ধরনের অপরাধীরা সাধারণত খুব বুদ্ধিমান হয়। তারা তাদের শিকারকে খুব সাবধানে নির্বাচন করে এবং তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ সুপরিকল্পিত হয়। তারা নিজেদেরকে সমাজের ‘বিচারক’ মনে করে। এই ধাতব কণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি হয়তো অপরাধীর কোনো বিশেষ চিহ্ন, অথবা তার কাজের সাথে সম্পর্কিত কোনো যন্ত্রাংশের অংশ। এটি তার ‘স্বাক্ষর’ হতে পারে, যা সে ইচ্ছাকৃতভাবে রেখে যাচ্ছে।”
অরুণিমা ড. মিত্রের কথা শুনে আশ্বস্ত হলেন। তার মনে হলো, তিনি সঠিক ব্যক্তির কাছে এসেছেন। ড. মিত্রের বিশ্লেষণ তার নিজের অনুমানের সাথে মিলে যাচ্ছিল। “ডাক্তার সাহেব, আপনার সাহায্য আমাদের খুব দরকার। এই মুহূর্তে আমরা দিশেহারা।”
ড. মিত্র মৃদু হাসলেন। “আমি অবসর নিয়েছি, ডিটেক্টিভ সেনগুপ্ত। কিন্তু এই ধরনের রহস্য আমাকে সবসময় আকর্ষণ করে। মানুষের মনের গভীরতা, অপরাধের পেছনের কারণ – এগুলো আমাকে ভাবায়। আমি আপনাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। তবে আমার কিছু শর্ত আছে।”
“কী শর্ত?” অরুণিমা জিজ্ঞেস করলেন, তার চোখে কৌতূহল।
“আমি আমার নিজের মতো করে কাজ করব। আমার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। আমি কোনো রকম সরকারি হস্তক্ষেপ বা চাপ পছন্দ করি না। এবং আমি কোনো রকম প্রচার চাই না। আমার নাম বা ছবি যেন কোনো সংবাদমাধ্যমে না আসে,” ড. মিত্র বললেন। “আমার কাজ হবে আপনাকে মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে সাহায্য করা, সরাসরি তদন্তে অংশ নেওয়া নয়।”
অরুণিমা রাজি হলেন। “ঠিক আছে, ডাক্তার সাহেব। আমরা আপনার শর্ত মেনে নেব। আপনার সাহায্যই আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান।”
অরুণিমা যখন ড. মিত্রের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন, তখন সন্ধ্যা নেমে এসেছে। পাহাড়ের উপর কুয়াশা আরও ঘন হয়েছে, চারপাশ যেন এক রহস্যময় আবরণে ঢাকা। কিন্তু অরুণিমার মনে এক নতুন আশার আলো। ড. মিত্রের উপস্থিতি যেন এই জটিল কেসের রহস্য উন্মোচনে এক নতুন দিশা দেখাল। তার বিশ্লেষণ অরুণিমাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। মৌন উপত্যকার গভীরে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার রহস্যের জাল এবার ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করবে, অরুণিমা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। এই নীরব উপত্যকার গভীরে লুকিয়ে থাকা সত্যকে তিনি উন্মোচন করবেনই।
(চলবে)
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion