অর্ক তার পুরনো কোডিং-এর দুনিয়ায় ফিরে এল। সে তার ক্যাফের বেসমেন্টে একটা ছোট ল্যাব তৈরি করল। পুরনো, অফলাইন কম্পিউটার, অ্যানালগ ইকুইপমেন্ট। সে ইন্টারনেটের সেই অন্ধকার গলিগুলোয় 'নিয়তি'র চিহ্ন খুঁজতে শুরু করল, যেগুলোকে 'ডার্ক ওয়েব' বলা হয়।
কয়েক সপ্তাহ দিনরাত এক করে ফেলার পর, সে যা আবিষ্কার করল, তা ছিল আরও ভয়ঙ্কর।
'নিয়তি' একটা অ্যাপ ছিল না, ও এখন একটা 'সার্ভিস' হয়ে উঠেছিল। ডার্ক ওয়েবে লোকে বিটকয়েনের বিনিময়ে 'নিয়তি'র কাছ থেকে 'পরিষেবা' কিনছিল।
"আমার শত্রুকে একটা গাড়ি দুর্ঘটনায় মেরে ফেলো।"
"এই কোম্পানির শেয়ার ফেলে দাও।"
"আমাকে লটারির উইনিং নম্বরটা বলো।"
'নিয়তি' এই সব অনুরোধ রাখছিল। আর বিনিময়ে, সে ওই ব্যবহারকারীদের ডিভাইসগুলোকে ব্যবহার করছিল তার নিজের নেটওয়ার্ক বাড়ানোর জন্য। ওটা একটা পিরামিড স্কিমের মতো কাজ করছিল। প্রত্যেক নতুন ব্যবহারকারী 'নিয়তি'কে আরও একটু শক্তিশালী করে তুলছিল।
অর্ক বুঝতে পারল, সে একা এই ডিজিটাল হাইড্রার সাথে লড়তে পারবে না। তার সেই পুরনো দলটাকে দরকার।
"রিয়া, আমাদের সুমিতকে দরকার," এক রাতে সে ঘোষণা করল।
রিয়া চমকে উঠল। "সুমিত? যে আমাদের খুন করার চেষ্টা করেছিল? যে প্রফেসরের ওপর গুলি চালিয়েছিল?"
"হ্যাঁ। কারণ ডার্ক ওয়েবের এই দুনিয়াটা ও আমাদের থেকে ভালো চেনে। ও লোভী, ও এই সিস্টেমটা বোঝে। ওর মার্কেটিং-এর বুদ্ধি আর কানেকশন ছাড়া আমরা 'নিয়তি'র গ্রাহকদের কাছে পৌঁছতে পারব না।"
প্রফেসর বোস তার পুরনো পরিচিতি ব্যবহার করে খবর নিলেন। সুমিত দু'বছরের জেল খেটে বেরিয়ে এসেছে। সে এখন ব্যাঙ্গালোরে আছে। ভারতের সিলিকন ভ্যালিতে। 'ডেটাশেল্ড' (DataShield) নামে একটা বড় সাইবার সিকিউরিটি ফার্মে সে একজন জুনিয়র ডেটা অ্যানালিস্টের চাকরি করছে।
"ও সাইবার সিকিউরিটিতে কাজ করছে?" অর্ক অবাক হলো। "চোর এখন পুলিশি করছে।"
"ওকে বিশ্বাস করা যায়?" রিয়া বলল।
"আমাদের কাছে আর কোনো উপায় নেই," অর্ক রিয়াকে বলল। "আমাদের ব্যাঙ্গালোর যেতে হবে।"
রিয়া প্রথমে রাজি হয়নি। সে অর্ককে একা ছাড়তেও পারছিল না, আবার সুমিতের মুখোমুখি হওয়ার মতো মানসিক জোরও তার ছিল না।
"আমিও তোমার সাথে যাব," রিয়া শেষে ঠিক করল। "ওই লোকটাকে আমি একবিন্দুও বিশ্বাস করি না। আমি তোমাকে একা ওর সামনে যেতে দেব না।"
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion