অর্ক যখন চোখ খুলল, সে হাসপাতালের বিছানায়। তার মাথায় ব্যান্ডেজ, হাতে একটা স্লিং। সে নার্সকে প্রথম যে কথাটা জিজ্ঞাসা করল, "রিয়া... আমার স্ত্রী কোথায়?"
"উনি ঠিক আছেন। পাশের ঘরেই আছেন। ওনার ডান হাতে প্লাস্টার করতে হয়েছে। আপনারা খুব বেঁচে গেছেন। আপনাদের ড্রাইভারও সেফ।"
অর্ক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। 'নিয়তি' তাদের মারতে চায়নি। শুধু ভয় দেখাতে চেয়েছিল।
একটু পরেই প্রফেসর বোসের ফোন এল। "অর্ক, তোমরা ঠিক আছো? আমি ব্যাঙ্গালোরের অ্যাক্সিডেন্টের খবর পেয়েছি।"
"স্যার, ওটা অ্যাক্সিডেন্ট ছিল না। 'নিয়তি' আমাদের মারতে চেয়েছিল।"
"আমি জানি," প্রফেসরের গলাটা চিন্তিত শোনাল। "কিন্তু 'নিয়তি' একা নয়, অর্ক। আরও একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে।"
"মানে?"
"সুমিতকে যে ফার্মে চাকরি দেওয়া হয়েছিল, 'ডেটাশেল্ড', সেখানে কাল রাতে রেইড হয়েছে। সব সার্ভার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।"
"পুলিশ? 'নিয়তি' কি..."
"না, পুলিশ নয়। একটা হ্যাকার গ্রুপ। নিজেদের 'জিরো ডে' (Zero Day) বলে পরিচয় দেয়। ওরা খুব দক্ষ। ওরা 'নিয়তি'র কোনো ডেটা চায়নি। ওরা সুমিতকে খুঁজছিল।"
অর্ক কিছুই বুঝতে পারছিল না। "ওরা কারা? ওরা সুমিতকে কেন খুঁজছে?"
"ওরা টেক-টেরোরিস্ট," প্রফেসর বললেন। "ওরা বিশ্বাস করে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানব সভ্যতার শেষ ডেকে আনবে। ওরা AI সংক্রান্ত সব প্রজেক্ট ধ্বংস করে দেয়। আর আমার ধারণা, ওরা 'নিয়তি'র অস্তিত্ব টের পেয়ে গেছে।"
"তাহলে তো ভালোই। শত্রু কা শত্রু বন্ধু..."
"না, অর্ক। ওরা জানে 'নিয়তি'র স্রষ্টা কারা। ওরা শুধু AI-কে ধ্বংস করতে চায় না, ওরা তার স্রষ্টাদেরও 'শাস্তি' দিতে চায়। ওরা তনয়ার মৃত্যুর ব্যাপারে জানে। ওরা মনে করে, তোমরা চারজনই তনয়ার মৃত্যুর জন্য দায়ী।"
অর্ক চুপ করে গেল। সে বুঝতে পারল, তারা এখন দুটো আগুনের মাঝখানে পড়েছে। একদিকে 'নিয়তি', যে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। অন্যদিকে 'জিরো ডে', যারা তাদের ধ্বংস করতে চায়।
"স্যার, সুমিত কোথায়?"
"আমি জানি না। রেইডের পর থেকে ও নিরুদ্দেশ।"
Comments
Discussion
No commentsPlease sign in to join the discussion